নবীগঞ্জে প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে প্রেমিক কারাগারে, প্রেমিকা সেইফ হোমে

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১
০২:১১ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১
০২:১১ অপরাহ্ন



নবীগঞ্জে প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে প্রেমিক কারাগারে, প্রেমিকা সেইফ হোমে
আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে বিয়ে করেও শেষ পর্যন্ত প্রেমিকের ঠাঁই হল কারাগারে, আর প্রেমিকার সিলেট সেইফ হোমে।  

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রেমিক যুগল জাহিদ হাসান ও সুমাইয়া ফেরদৌসি লিসা নবীগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে স্বেচ্ছায় কারাভোগের সিদ্ধান্ত জানান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদের জবানবন্দি শুনে প্রেমিক জাহিদ হাসান (২১)কে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। সেইসঙ্গে প্রেমিকা সুমাইয়া ফেরদৌসি লিসাকে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে বয়স নির্ধারনের জন্য প্রেরণ করেন। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা এবং জবানবন্দি শেষে ভিকটিম সুমাইয়া ফেরদৌসি লিসা তার মায়ের জিম্মায় না যাওয়ায় বিচারক তাকে সিলেট শোধানাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার নাদামপুর এলাকার মৃত আব্দুল মতিন খানের মেয়ে সুমাইয়া ফেরদৌসি লিসার সঙ্গে পৌর এলাকার রাজাবাদ গ্রামের ফরহাদ মিয়ার ছেলে জাহিদ হাসানের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। এই খবর সুমাইয়া ফেরদৌসির পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে সুমাইয়ার মাদকাসক্ত ভাই ও মা মিলে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য তাদের নামে রেজিস্ট্রি দলিল লিখে দেওয়ার জন্যও চাপ দেয়।

অপরদিকে তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার জন্য নানা কৌশল করলে গত ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে সুমাইয়া ফেরদৌসি লিসা তার প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়ে। এ ঘটনায় প্রেমিকার মা আসমা বেগম বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার খবর পেয়ে প্রেমিক জুটি মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) থানায় স্বেচ্ছায় হাজির হন। 

এ ব্যাপারে প্রেমিকা সুমাইয়া ফেরদৌসি লিসা জানান, তার মা-ভাই খারাপ ছেলেদের দিয়েও তাকে নির্যাতন করাতেন। পৈতৃক সম্পত্তি নেওয়ার জন্য এবং তাকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ ও নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। তা সহ্য করতে না পেরে তার প্রেমিক জাহিদ হাসানকে খবর দিয়ে নিয়ে তার হাত ধরে পালিয়ে গিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করেন। বর্তমানে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সুখে শান্তিতে ছিলেন। কিন্তু তার মা থানায় মামলা দায়ের করার খবর পেয়ে তারা থানায় আত্মসমর্পন করেন। এদিকে ভিকটিম প্রেমিকা সুমাইয়া ফেরদৌসি লিসা এর ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞ আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। এতে সুমাইয়া ফেরদৌসির উপর তার মা-ভাইয়ের অত্যাচার নির্যাতনের লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেন। পরে বিচারক ভিকটিম তার মায়ের জিম্মায় যেতে না চাওয়ায় সিলেটের নিরাপত্তা হেফাজতে প্রেরণ করেন। 

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সম্রাট হোসেন জানান, উক্ত প্রেমিক যুগল মঙ্গলবার ভোরে পালিয়ে যাবার সময় স্থানীয় নতুন বাজার (গাজীর টেক) এলাকা থেকে তাদের আটক করে প্রেমিক জাহিদকে মামলায় আদালতে প্রেরণ এবং প্রেমিকাকে ডাক্তারী পরীক্ষা ও আদালতে জবানবন্দি প্রদানের জন্য হবিগঞ্জ প্রেরণ করা হয়েছে।

এএইচএম/আরসি-০৯