কবির আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
১১:২৬ অপরাহ্ন

আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১
১১:২৬ অপরাহ্ন

অবশেষে ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পথ চলা শেষ হচ্ছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই সেতু-কলাবাড়ী-দয়ারবাজার সড়কে চলাচলকারী জনসাধারণের। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সংস্কার না হওয়া এ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্প (১ম সংশোধিত) এর আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে বাস্তবায়ন হবে এ প্রকল্প। ধলাই সেতু থেকে দয়ারবাজারের পূর্ব পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার ৭৫ মিটার আরসিসি রাস্তার কাজে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ কোটি ৪৬ লাখ ১ হাজার ৬১৪ টাকা। প্রকল্পের দরপত্র আহ্বানসহ সামগ্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এরই মধ্যে এলজিইডি সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলীকে পত্র দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই সড়কের মাঝে মাঝে বড় বড় গর্ত। কোনো কোনো গর্তে বৃষ্টির পানি জমে ছোট পুকুরের আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যেই কোনোমতে গাড়ি চলছে। শুকনো মৌসুমেও এসব গর্তে প্রতিনিয়ত আটকে পড়ে গাড়ি। রাস্তাজুড়ে খানাখন্দ। বড় বড় গর্ত এখন ছোট-খাটো জলাশয়ে রূপ নিয়েছে। এসব গর্তে জমে থাকে পানি। ফলে কাদা-পানিতে একাকার সড়কে চলতে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। যাত্রীবাহী যানবাহনও চলছে ঝুঁকি নিয়ে। স্থানে স্থানে বড় বড় গর্তে গাড়ি চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। এ পথে কেউ একবার গেলে দ্বিতীয়বার যেতে চান না। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছেন হাজার হাজার মানুষ।

দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পর এই সড়কের উন্নয়ন কাজ হবে শুনে মহাখুশি উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন ও উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ মানুষ। এই দুটি ইউনিয়নের মানুষের উপজেলা সদর ও সিলেট শহরের যোগাযোগের একমাত্র উপায় এই সড়ক।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক হৃদয় আহমদ বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই গাড়ি চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেক সময় গাড়ি কাদা-পানিতে আটকে থাকে। যদি রাস্তা সংস্কার হয়, তাহলে গাড়ি ভালো থাকবে এবং ভাড়াও কমে যাবে। 

স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী রাকিব আল হাসান বলেন, এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যায়। এমনকি রাস্তা দিয়ে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সও চলাচল করতে পারে না। শুনেছি রাস্তার জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ করা হলে আমরা অনেক বছরের কষ্ট থেকে মুক্তি পাব।

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও কলাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আলা উদ্দিন বলেন, এই সড়কটির সম্ভাব্য উন্নয়নে যারা অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন তাদের সবাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষ করে কলাবাড়ি গ্রামের কৃতী সন্তান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (প্রশাসন-২) মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমদ, এলজিইডি'র প্রধান প্রকৌশলী, সিলেট এলজিইডি'র তত্ত্বাবধায়ক ও নির্বাহী প্রকৌশলী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য বলেন, ধলাই সেতু-কলাবাড়ী-দয়ারবাজার পর্যন্ত পৌনে ৪ কিলোমিটার সড়ক আরসিসি ঢালাইয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে দয়ারবাজার থেকে হাদারপাড় সড়কের কাজ হবে। এ সড়কটি আরসিসি ঢালাই হলে জনসাধারণের চলাচল ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।

এমকে/আরআর-০১