আবির হাসান-মানিক, তাহিরপুর
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১
১০:৫৬ অপরাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১
১০:৫৬ অপরাহ্ন
শহীদ সিরাজ লেক
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে পর্যটকদের আনোগোনা। সুনামগঞ্জে প্রতি বছর যে পরিমাণ পর্যটক ঘুরতে আসেন, তাদের অধিকাংশই আসেন তাহিরপুর উপজেলায়। এ উপজেলায় রয়েছে রামসার সাইট খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওর, দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান, শহীদ সিরাজ লেক, যাদুকাটা নদী, বড়গোপটিলাসহ (বারেকটিলা) বেশ কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটন কেন্দ্র।
পর্যটনকে কেন্দ্র করে বর্ষা কিংবা শুষ্ক, উভয় মৌসুমেই প্রতিদিন হাজারও পর্যটক ভিড় জমান এ উপজেলায়। কিন্তু নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকার কারণে আগতদের পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্ত হওয়া আরেক বিড়ম্বনার নাম পথ নির্দেশক বা সাইনবোর্ড।
সরেজমিনে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে আব্দুজ জহুর সেতু হয়ে অনেক পর্যটক যাদুকাটা নদীর খেয়া পার হয়ে তাহিরপুর উপজেলায় প্রবেশ করে থাকেন। কিন্তু যাদুকাটা নদীর খেয়া পার হয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। কারণ শহীদ সিরাজ লেক, বড়গোপটিলা, শিমুল বাগান বা টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে কোনো পথ নির্দেশক বা সাইনবোর্ড নেই। তাছাড়া এসব স্পটে যেতে রয়েছে আঁকাবাঁকা একাধিক সড়ক। ফলে পথ ভুল করে পর্যটকদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে না গিয়ে অন্যত্র চলে যেতে দেখা যায়।
এদিকে, ভারত সীমান্তবর্তী শহীদ সিরাজ লেকে প্রবেশ কিংবা বের হওয়ার নির্ধারিত কোনো ফটক ও সময়সূচি না থাকায় সেখানেও রয়েছে নিরাপত্তার ঝুঁকি। ময়লা ফেলার জন্য কোনো ডাস্টবিনও নেই। তাই যার যেখানে ইচ্ছা ময়লা ফেলছেন। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।
অপরদিকে, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বড়গোপটিলার আঁকাবাঁকা উঁচু সড়কটি বেহাল। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও দর্শনার্থীরা টিলার উপরে উঠে পাহাড় ও যাদুকাটা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করেন। আর প্রশাসনিক নিরাপত্তা না থাকায় অপ্রীতিকর ঘটনার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা এম রাশিদ নূর জানান, শহীদ সিরাজ লেকের স্বচ্ছ জলধারা ভালো লেগেছে। তবে সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুরে আসতে গিয়ে একাধিকবার পথ ভুলে বিড়ম্বনায় পড়েছি। পথচারীদের জিজ্ঞেস করে করে আসতে হয়েছে। তাই অনেক সময় ব্যয় হয়েছে। বিড়ম্বনা এড়াতে পথ নির্দেশক বা সাইনবোর্ডের ব্যবস্থা করা খুব জরুরি।
তাহিরপুরে ঘুরতে আসা সিলেটের এমসি কলেজের শিক্ষার্থী তাসনুভা মিম বলেন, যাদুকাটা নদীর খেয়া পার হয়ে শিমুল বাগানে যেতে গিয়ে পথ ভুল করে স্থানীয় একটি বাজারে চলে গিয়েছিলাম। সেদিন অনেক সময় নষ্ট হয়েছিল। ফলে সময় স্বল্পতার কারণে ওইদিন টাঙ্গুয়ার হাওর দেখা হয়নি।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা বলেন, পর্যটকদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পথ নির্দেশক থাকা জরুরি বলে মনে করি। অনাকাঙ্খিত বিড়ম্বনা এড়াতে এ বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাই।
তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির সিলেট মিররকে বলেন, পথ নির্দেশক বা সাইনবোর্ডের বিষয়টি এখন যেহেতু জানা হলো, এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এএইচ/আরআর-০১