ধর্মপাশা প্রতিনিধি
অক্টোবর ০৩, ২০২১
০৯:৩৮ অপরাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ০৩, ২০২১
০৯:৩৯ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মুহাম্মদ এমরান হোসেনকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে মাসোহারা দিতে রাজি না হওয়ায় হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে অস্থায়ীভাবে কর্মরত মিথুন চক্রবর্তীকে হাসপাতালের যাবতীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী মিথুন চক্রবর্তী ৩০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ডাকযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ পাঠিয়েছেন।
ওই ভুক্তভোগী ব্যক্তির দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫০শয্যা বিশিষ্ট ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক সংকট থাকায় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌর শহরের রাউতপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিথুন চক্রবর্তী (২৯) উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে এই হাসপাতালে নিযুক্ত করা হয়।
২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সেখানে দায়িত্ব পালন শুরু করেন এবং সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় ওই উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা সম্মানীভাতা দেওয়া হতো।
উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পীযুষ তালুকদার গত ৪আগস্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত ওই উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের কাছে বলেন যে, এই হাসপাতালে চাকরি করতে হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে প্রতিমাসে ১০হাজার টাকা করে মাসোহার দিতে হবে। অন্যথায় তাঁকে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও বিপদে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। মাসোহারা দেওয়ার প্রস্তাবে ওই উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ অবস্থায় গত ৮ আগস্ট দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ এমরান হোসেন ওই উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মিথুন চক্রবর্তীকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওই উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে হাসপাতালের যাবতীয় দায়িত্ব থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়ে দেন।
মিথুন চক্রবর্তী বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ এমরান হোসেন স্যারকে প্রতিমাসে ১০হাজার টাকা মাসোহারা দেওয়ার জন্য স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পীযূষ তালুকদার আমার কাছে দাবি জানান।
মাসোহারা দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমি প্রায় ছয়বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি। আমার সঙ্গে এমনটি হবে আশা করিনি। আমি ন্যায় বিচার চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের কাছে বৃহস্পতিবার ডাকযোগে লিখিত ভাবে অভিযোগ পাঠিয়েছি।
স্যনিটারী ইন্সপেক্টর পীযূষ তালুকদার তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উপজেলা স্বা’]স্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগটি মিথ্যা,বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সিভিল সার্জন মহোদয়ের নির্দেশে এই হাসপাতালে অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত মিথুন চক্রবর্তীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন শামস উদ্দিন আজ রবিবার বিকেলে মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, এই হাসপাতালে,সরকারি কোনো কর্মকর্তার বা কর্মচারীর বাইরে যাতে কেউ কাজ না করে সেজন্য ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এস এ/বি এন-১৪