স্কট মরিসনকে মিথ্যাবাদী বললেন ম্যাক্রোঁ

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ০১, ২০২১
০২:৩৬ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০১, ২০২১
০২:৩৬ অপরাহ্ন



স্কট মরিসনকে মিথ্যাবাদী বললেন ম্যাক্রোঁ

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে মিথ্যাবাদী বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলছেন, সাবমেরিন চুক্তি নিয়ে অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা বলেছিলেন। ফ্রান্সকে অন্ধকারে রেখে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর ও সাবমেরিন ইস্যুতে সম্পর্কের ব্যাপক অবনতির প্রেক্ষিতে এই মন্তব্য করলেন তিনি।

সোমবার (১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। অবশ্য যেকোনো ধরনের অসততা এবং মিথ্যার কথা অস্বীকার করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। গত সেপ্টেম্বরে বিশেষ নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর ও সাবমেরিন ইস্যুতে তীব্র টানাপোড়েনের পর ইতালির রাজধানী রোমে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হন এই দুই সরকারপ্রধান।

বিবিসি জানিয়েছে, রোমে জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে সামনে পান অস্ট্রেলিয়ার এক সাংবাদিক। সেসময় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে মিথ্যাবাদী মনে করেন কি না, ম্যাক্রোঁকে এমন প্রশ্ন করে বসেন ওই সাংবাদিক। জবাবে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমি মনে করি না, আমি জানি (তিনি মিথ্যাবাদী)।’

এসময় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে আবারও বিশ্বাস করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্ন করেন ওই সাংবাদিক। জবাবে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমরা দেখবো তিনি কী কাজ করেন।’

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, ‘আপনাদের দেশকে আমরা অনেক সম্মান করি। আপনাদের দেশের সকলের জন্য আমাদের ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব রয়েছে। আমি কেবল এতটুকই বলতে চাই যে, আমরা যখন আপনাকে সম্মান করবো- তখন আপনাকে সৎ থাকতে হবে। এবং আপনার আচরণও হতে হবে যথাযথ মূল্যবোধ অনুযায়ী।’

তবে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যেকোনো ধরনের অসততা এবং মিথ্যার কথা অস্বীকার করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের জবাবে অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে কোনো মিথ্যা কথা বলেননি।

স্কট মরিসন দাবি করেন, প্রচলিত ও গতানুগতিক সাবমেরিনের মাধ্যমে এখন আর অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চাহিদা মিটবে না। এই কথাটি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে আমি আগেই জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, চীনকে মোকাবিলা করতে গত সেপ্টেম্বরে প্রভাবশালী পশ্চিমা তিনটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে অকাস নামের একটি নিরাপত্তা চুক্তির কথা ঘোষণা করা হয়। এর কয়েকদিন পরেই এই সমঝোতা বড় ধরনের সমালোচনার মুখে পড়ে। ঐতিহাসিক এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের জন্য উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সরবরাহের কথা বলা হয়।

তবে পরমাণু শক্তিধর দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিধর সদস্য ফ্রান্স এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করে। অকাসের তীব্র নিন্দা করে দেশটি সেসময় জানায়, এর মাধ্যমে তাদের ‘পিঠে ছুরি মারা হয়েছে।’

অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেই প্যারিস এতটা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার মূল্যের সেই চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। ওই চুক্তির আওতায় অস্ট্রেলিয়ার জন্য ১২টি সাবমেরিন নির্মাণ করার কথা ছিল। কিন্তু অকাস চুক্তির পর আগের চুক্তিটি বাতিল হয়ে যায় এবং ফ্রান্স বিপুল পরিমাণ ওই হারায়।

বি এন-০৩