নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
নভেম্বর ১০, ২০২১
০৮:০০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১০, ২০২১
০৮:০২ পূর্বাহ্ন
আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ৬নং কুর্শি ইউনিয়নে ৬ জন প্রার্থীর মাঝে ৬ জনই যুক্তরাজ্য প্রবাসী অর্থাৎ লন্ডন প্রবাসী।
৬ প্রার্থীই লন্ডন প্রবাসী হওয়ায় নির্বাচনে টাকার ছড়াছড়ি হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে ধারণা করছেন অভিজ্ঞ মহল।
এছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকার মাঝি আলী আহমদ মুসা লন্ডন চলে যাওয়ার কারণে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬নং কুর্শি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে উপজেলা সর্বত্র চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।
গত ০২ নভেম্বর মনোনয়ন জমা দানের শেষ দিন পর্যন্ত মোট ০৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দেন। বাছাইয়ের সময় যুবলীগ নেতা জামাল উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিল হয়। ফলে বাকি থাকেন ৬ জন প্রার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, বৈধ ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৬ জনই যুক্তরাজ্য প্রবাসী। তারা হচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী আলী আহমদ মুসা, বর্তমান চেয়ারম্যান মুসার আত্মীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বিদ্রােহী প্রার্থী আব্দুল মুকিত, আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী লন্ডনের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ আবু তালিম নিজাম চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ফারছুর ছোট ভাই যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা মো. শামসুল হুদা চৌধুরী বাচ্চু, যুক্তরাজ্য প্রবাসী আরেক কমিউনিটি নেতা মো. আব্দুল গফুর এবং সাবেক চেয়ারম্যান ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদ।
চেয়ারম্যান পদে ৬ প্রার্থীর মাঝে ৬ জনই যুক্তরাজ্য প্রবাসী হওয়া বিশেষ করে নৌকার মাঝি বর্তমান চেয়ারম্যান আলী আহমদ মুসা ০১ নভেম্বর তড়িঘড়ি করে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে ওইদিন রাতেই যুক্তরাজ্য চলে যাওয়ার খবর সর্বপ্রথম দৈনিক সিলেট মিরর পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর পর ঘটনাটি জানা জানি হলে ব্যাপক আলোচনায় চলে আসে এ ইউনিয়নের নির্বাচন।
সরকারি দল আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মুসার লন্ডন যাওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম। তবে তার এভাবে যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে নবীগঞ্জের সর্বত্র চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
দলীয় ও পারিবারিক একাধিক সূত্রে জানা গেছে মুসা বর্তমান সময় নিয়ে মোট ৩ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে তার নির্বাচন করার কথা ছিল না। পারিবারিকভাবে কথা ছিল মুসার আত্মীয় আব্দুল মুকিত নির্বাচন করবেন। কিন্তু মুসা আবারও প্রার্থী হন। এ খবর জানতে পেরে মুসার স্ত্রীর ফোন পেয়েই মুলত মুসা যুক্তরাজ্যে চলে যান এ বিষয়টি এখন সবার মুখে মুখে আলোচনায়। তার উপর মুসার আত্মীয় আব্দুল মুকিত ও অপর লন্ডনী আওয়ামীলীগ নেতা আবু তালিম চৌধুরী নিজাম হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী।
১১টি ইউনিয়নেও একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় এবারের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ব্যাপক ভরাডুবির আশংকা রয়েছে।
এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরীর আপন ছোট ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাবেদুল আলম সাজু ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গত নির্বাচনে সামান্য ভোটে পরাজিত নির্মলেন্দু দাশ রানাসহ হেভিওয়েট নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে নৌকার প্রার্থীদের চেয়ে কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্রোহীদের পাশ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পাশের সম্ভাবনা রয়েছে। সব আলোচনা ছাড়িয়ে বর্তমানে মুসা আলোচনায় নবীগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সরগরম অবস্থা বিরাজ করছে।
এ এইচ/বি এন-০৫