নৌকা পেতে চার দুয়ারে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ১২, ২০২২
০২:৩৩ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ১২, ২০২২
০২:৩৫ অপরাহ্ন



নৌকা পেতে চার দুয়ারে প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ
আগামী ১৫ জুন ভোট

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে প্রার্থীদের তৎপরতা। বিরোধী দলগুলোর মধ্যে দুটি নির্বাচন নিয়ে এখনও তেমন তৎপরতা চোখে না পড়লেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নানামুখী দৌড়ঝাঁপ ও লবিং নির্বাচনের আবহ এনে দিয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ছুটছেন নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে। ঢাকা-সিলেট ছুটছেন অনেকে। 

বিশেষ করে কেন্দ্র ও স্থানীয় মিলে চার নেতার কাছে ছুটছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানপদ প্রত্যাশী ১০ জন। দলের কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে, দু-একদিনের মধ্যেই অবসান হয়ে সব জল্পনা-কল্পনার। 

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যানপদে উপনির্বাচন আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামী ১৭ মে। মনোনয়ন বাছাই ১৯ মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৬ মে। আগামী ১৫ জুন দুটি জায়গায়ই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। 

তফসিল ঘোষিত হলেও নির্বাচনকে ঘিরে এবার আওয়ামী লীগ ছাড়াও অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে বিএনপির কেন্দ্র থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের কোনো প্রার্থী ভোটের নাম মুখে নিচ্ছেন না। এতে করে আওয়ামী লীগের ভেতরে ভোটের উত্তাপ বাড়ছেই। নৌকা প্রতীক নিশ্চিত করতে পারলেই বিজয় নিশ্চিত অনেকটা এমন ধারণা থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের উৎসাহ তুঙ্গে। 

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিতিতে উপজেলায় অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি হননি। ফলে জেলা আওয়ামী লীগ গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানপদ প্রত্যাশীদের তালিকায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করেই তা কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্র থেকেই সিদ্ধান্ত আসবে কোথায় কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি। 

গত রবিবার (৮ মে) গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চেয়ারম্যানপদে উপনির্বাচনে যারা মনোনয়ন চেয়েছেন তারা হচ্ছেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শীলা, প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ চৌধুরীর ছোটভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য মঞ্জুর শাফি চৌধুরী এলিম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল ওহাব জোয়ারদার মওসুফ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী ফখর, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ফরহাদ আহমদ। আমেরিকার নিউ জার্সি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিক উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে দলীয় ফোরামে মনোনয়ন চাননি। 

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এসব সম্ভাব্য প্রার্থী ছাড়া গোলাপগঞ্জে আর কেউ এ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে আগ্রহী হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে প্রবাসী আবুল কালাম উপজেলাজুড়ে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেও শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থী হবেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

জেলা থেকে তালিকা কেন্দ্রে যাওয়ার পর মনোনয়ন প্রত্যাশি আওয়ামী লীগ নেতাদের যেন দম ফেলার ফুসরৎ নেই। মনোনয়ন লাভের আশায় তারা ছুটছেন নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে। নিজেদের যত চ্যানেল, লবিং আছে সব কাজে লাগাতে মরিয়া তারা। 

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন পেতে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান ও কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন প্রার্থীরা। পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম পূরণ করে তা জমা দেওয়ার পর ঢাকায় লবিং করছেন অনেকে। 

এ লবিংয়ে সবচেয়ে তৎপর দেখা যাচ্ছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শিলা, সদ্য প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ চৌধুরীর ছোট ভাই মঞ্জুর শাফি চৌধুরী এলিম, আব্দুল ওয়াহাব জোয়ারদারকে। 

তবে, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী লবিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা প্রার্থীদের তালিকা ঢাকায় পাঠিয়েছি। মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের কাছে কেউ লবিং করে কোনো লাভ হবে না।’


এফএ-০১/এএফ-০১