গুলি চললেও আমরা রাজপথ ছাড়ব না : মির্জা আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ১৪, ২০২২
১০:০৩ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ১৪, ২০২২
১০:০৩ অপরাহ্ন



গুলি চললেও আমরা রাজপথ ছাড়ব না : মির্জা আব্বাস

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘দেশে আগের পরিবেশ যেমন নেই, তেমনি আগের বিএনপিও এখন নেই। আর কোনো হামলার ঘটনা হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সর্বত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সাহস থাকলে গুলী চালাবে, আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।’ আজ শনিবার (১৪ মে) দুপুরে জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করে জনগণের ১২ টা বাজিয়ে দিচ্ছে। দুর্নীতি ও পাচারের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্রমশই খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সরকার মাথাপিছু আয় বাড়ার কথা প্রচার করে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে। অথচ একটা শিশু ভুমিষ্ট হওয়ার আগেই ৪৯২ ডলার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। সেটা তারা প্রচার করছে না। অবৈধভাবে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে সরকার আজ একঘরে হয়ে আছে। বিশ্বে আজ দেশের কোনো বন্ধু নেই। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য লজ্জার।’

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘সরকারের অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে টাকা গেছে তা ফেরত আসবে। মন্ত্রী মেরে দেওয়া টাকার কথা কিন্তু কিছু বলেননি। তারা জানে কারা টাকা মেরে দিয়েছে, কারা টাকা পাচার করেছে। সরকারের পৃষ্টপোষকতায় দেশে দুর্নীতি, লুটপাট ও বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ড. খন্দকার মোশাররফ, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন, বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন সহ দেশব্যাপী বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসা বাড়ীতে হামলা করেছে। বিএনপির আন্দোলনের কথা শুনে সরকারের পায়ের তলার মাঠি নেই। তাই তাদের নেতাকর্মীরা হামলা নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। এর পরিনতি ভাল হবে না।’  

জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় নগরের দরগা গেইটস্থ কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সুলেমান হলে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি শ্রীলঙ্কার প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলবো অনেক হয়েছে এবার আপনাদেরও পালানোর সময় এসে গেছে। নেতাকর্মীদের বক্তব্যে শুধু আন্দোলনের কথা এসেছে। আমিও বলছি আন্দোলনের ডাক আসছে। কয়েকদিন অপেক্ষা করুন আর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিন। ভয় পাবেন না কোনো নেতাকর্মীর বুকে গুলি করার সাহস এই সরকারের নেই। হযরত শাহজালাল (র.) ও শাহপরান (র.) সহ ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত সিলেটের সন্তান হচ্ছেন এম সাইফুর রহমান ও আমার প্রিয় ভাই এম ইলিয়াস আলী। সিলেট বিএনপিকে দুর্বল করতেই ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। সময়ের পরিবর্তনে সবকিছুর হিসাব নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। শুধু এইটুক বলবো, হাসিনা সরকার ও তাদের তাবেদার কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। কেউ যদি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে চায় তারা দালাল হিসেবে চিহ্নিত হবে। আর দালালদের কোনো ক্ষমা নেই।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল গাফফার, সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মামুনুর রশীদ মামুন, অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন, মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, সামিয়া বেগম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, সালেহ আহমদ খসরু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী ছুফি, বালাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি গোলাম রব্বানী, ওসমানীনগর উপজেলা সভাপতি এস টি এম ফখর, বিশ^নাথ উপজেলা সভাপতি লিলু মিয়া চেয়ারম্যান, বিশ্বনাথ পৌর সভাপতি বশির উদ্দিন আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা সভাপতি নোমান উদ্দিন মুরাদ, গোলাপগঞ্জ পৌর সভাপতি নজরুল ইসলাম, বিয়ানীবাজার উপজেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট আহমদ রেজা, জকিগঞ্জ উপজেলা সভাপতি শফিক উদ্দিন, জেলা শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুকে এলাহী, মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি ইউনুস মিয়া, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল, জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, মহানগর স্বেচ্চাসেবক দলের সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব দেওয়ান জাকির হোসেন খান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিফতাউল কবির মিফতা, মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুম ইবনে রাজ্জাক রুমেল, জেলা জাসাসের আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন তরফদার, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী সালেহা কবির শেপি, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, মহানগর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তোফায়েল আহমদ, জেলা সাধারণ সম্পাদক হাজী দিনার ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান প্রমুখ। সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক জাহেদ আহমদ।

সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার পর আমরা অঙ্গিকার করেছিলাম যেকোনো আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করব। আজ আবার প্রতিজ্ঞা করলাম আন্দোলনের ডাক এলে সিলেট বিএনপি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।’

বিএ-০২