নাগরিকত্ব ফেরেনি ‘আইএস বধূ’ শামীমার

সিলেট মিরর ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
০৬:১৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
০১:২৪ পূর্বাহ্ন



নাগরিকত্ব ফেরেনি ‘আইএস বধূ’ শামীমার

শামীমা বেগম।


‘আইএস বধূ’ খ্যাত শামীমা বেগম ব্রিটেনে ফিরতে পারবেন না। তার শেষ আপিলের রায়ে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ব্রিটিশ আদালত। আট বছর পূর্বে ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে ব্রিটেন ছেড়েছিলেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে তার জন্য ব্রিটেনের দরজা বন্ধ করে দেয় ব্রিটিশ সরকার। এর পর থেকে ব্রিটেনে ফিরতে আদালতে লড়াই চালিয়ে যান শামীমা।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) লন্ডনের একটি অভিবাসন আদালত শামীমা বেগমের ভাগ্য নির্ধারণী এই রায় দেন।

গত বছর ‘দ্য স্পেশাল ইমিগ্রেশনস আপিল কোর্ট’ বা সিয়াক-এ শামীমা বেগমের আইনজীবীরা দাবি করেন, তিনি মানবপাচারের শিকার হয়েছিলেন। তাকে অনলাইনের মাধ্যমে ব্রেন ওয়াশ করা হয়েছে এবং পরে তাকে পাচার করে সিরিয়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

যদিও ব্রিটিশ সরকারের পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দেন যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ মূলত জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন। ব্রিটিশ সরকার সে সময় দাবি করেছিল, শামীমার পিতা-মাতা সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছিল। যদিও বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে।

শামীমার আইনজীবী ড্যান স্কুয়ার্স আদালতকে বলেন, শামীমা যদি বাংলাদেশে ফিরে যান তাহলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে এবং ব্রিটিশ সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কারণে তিনি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন।

২০১৯ সালে সানডে টাইমসের এক সাংবাদিক শামীমা বেগমকে খুঁজে পান সিরিয়ার একটি ক্যাম্পে। শামীমা বেগম তত দিনে তিন সন্তানের মা হলেও সবগুলো সন্তানই জন্মের পর নানা অসুখে মারা যায়। এ সময় শামীমা বেগম যুক্তরাজ্যে ফেরার আগ্রহের কথা জানিয়ে বলেন, তিনি যা করেছেন তার জন্য মোটেও অনুতপ্ত নন। এর পরই আবারও বিতর্ক শুরু হয় শামীমা বেগমকে নিয়ে। ২০১৯ সালেই তুমুল বিতর্কের মধ্যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল করেন।

এরপর ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। পরে শামীমা বেগম ব্রিটেনকে ভালোবাসেন, তিনি যা করেছেন তার জন্য অনুতাপও প্রকাশ করেন। ব্রিটেনে ফিরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। তিনি সরকারকে সহায়তা করার ইচ্ছার কথাও জানান। তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শামীমার আইনজীবী ও পরিবার স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিলস কমিশনে আবেদন করে। দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে পাঁচটি তারিখে শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালের রায় এলো। 

২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শামীমা বেগম তার দুজন বান্ধবীর সঙ্গে স্কুল থেকে পালিয়ে তুরস্ক হয়ে সিরিয়াতে আইএসে যোগ দেন। সেখানে শামীমা বেগমের সাথে বিয়ে হয় ডেনমার্কের নাগরিক জিহাদি রেজভিকের। শামীমা বেগম বিশ্ব গণমাধ্যমে সবচেয়ে আলোচিত, সমালোচিত ‘আইএস বধূ’ হিসেবে পরিচিত।


এএফ/০২