সিলেট মিরর ডেস্ক
মার্চ ১২, ২০২৩
০৬:০৭ অপরাহ্ন
আপডেট : মার্চ ১৩, ২০২৩
০২:১০ পূর্বাহ্ন
বাস ড্রাইভারের সঙ্গে কথাকাটি জেরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও রাজশাহী বিশ্বদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষে হতাহত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৬ শিক্ষার্থী। তবে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন ১০ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে তিনজনের চোখে ও তিনজনের পুরো শরীরে গুলির ক্ষত চিহ্ন আছে। একজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
রোববার (১২ মার্চ) সকালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি আমাদের ছাত্রদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। আমাদের সব ছাত্ররা যেন চিকিৎসা পায় সেটি দেখভাল করছি। ছাত্রদের সবার অবস্থা মোটামুটি ভালো আছে। শনিবার রাতে সংঘর্ষের মাত্রা তীব্র হলে পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ এসে এলোপাতাড়ি রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ১০ শিক্ষার্থীর গায়ে গুলি লাগে। গুরুতর অবস্থায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক)। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আশঙ্কাজনক একজন আইসিইউতে ভর্তি আছে।
এদিকে, পুলিশের শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করে আন্দোলন করছে। যার ফলে ঢাকাগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১১টা ২০ এ ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এখনও তা ছেড়ে যায়নি।
এদিকে, সংঘর্ষের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ কর্মকর্তারা।
উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার মাইক নিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের প্রতি অনুরোধ-হলে ফিরে যাও। তোমাদের জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। রুমে যাও তোমরা। এ ঘটনায় প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। আগামী দুদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ।
অপরদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১২ মার্চ) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে উত্তপ্ত করে তুলেন ক্যাম্পাস। এ বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা যোগদান করছেন।
এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের শতশত ভাইয়েরা আহত মেডিকেল ভর্তি আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। প্রশাসনের ঘুমন্ত চেহারা আমরা অনেক দেখেছি। গতকালের ঘটনায় আমরা প্রশাসনের কাউকেই পাশে পাইনি। প্রক্টরের পদ কেন রাখা হয়েছে। এসময় প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন ভবনের পর ভিসির বাস ভবন ঘেরাও করে তারা আন্দোলন চলমান রাখবেন বলে জানান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেইলকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম।
নতুন করে সংঘর্ষ যাতে না হয় সেজন্য সাত প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
এসই/০১