হলুদ আর কমলার লড়াই

সিলেট মিরর ডেস্ক


অক্টোবর ২৫, ২০২৩
০১:৩১ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ২৬, ২০২৩
১২:২৫ পূর্বাহ্ন



হলুদ আর কমলার লড়াই

অস্ট্রেলিয়ার নাম শুনলে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে সবার আগে আসে হলুদ জার্সিধারী একটি দল, যারা দাপটের সঙ্গে যেকোনো প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেয়। রেকর্ড পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, যে দলটির আছে টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক শিরোপাও। কিন্তু ক্রিকেটের এই পরাশক্তির চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে শুরুটা ছিল হতাশার।


যদিও ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা, ফিরতে শুরু করেছে চেনা চেহারায়। জয়ের ধারায় থাকতে দলটির সামনে এখন নেদারল্যান্ডস চ্যালেঞ্জ। শক্তি-সামর্থ্যে পিছিয়ে থাকা দলটিকে হালকাভাবে নেওয়ার উপায় নেই। উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে কদিন আগে মাটিতে নামিয়ে এনেছিল ডাচরাই। জেগে ওঠা অস্ট্রেলিয়াকে কি থামাতে পারবে কমলা জার্সিধারীরা? উত্তর মিলবে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে আজ দুই দলের লড়াইয়ের পর। বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধারের অভিযানে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ছিল হার দিয়ে। স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ৬ উইকেটে হেরে যায় তারা। দক্ষিণ আফ্রিকা তো গুঁড়িয়ে দেয় তাদের, জয়ের ব্যবধান ১৩৪ রানের। ধুঁকতে থাকা অজিরা প্রথম জয়ের স্বাদ পায় নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে, লঙ্কানদের বিপক্ষে ৫ উইকেটে।


এশিয়ার আরেক দল পাকিস্তানও পেরে ওঠেনি তাদের সঙ্গে। ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শের রেকর্ড গড়া উদ্বোধনী জুটিতে সাড়ে তিনশো ছাড়ানো পুঁজি গড়ে ৬২ রানের জয় তুলে নেয় অজিরা। বিশ্বকাপে ১২ বছর পর খেলতে আসা নেদারল্যান্ডসের শুরুটাও ছিল বাজে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮১ ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ৯৯ রানে হারে তারা। কিন্তু এরপরই খর্বশক্তির দলটি ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দেয়। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো ডাচরা এবার ওয়ানডের বৈশ্বিক আসরেও প্রোটিয়াদের দেয় তেতো স্বাদ, ৩৮ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ওয়ানডেতে প্রথম জয়ের পর ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। লঙ্কানদের বিপক্ষে পরের ম্যাচে ৫ উইকেটে হেরে যায় তারা। তাতে অবশ্য হুমকি কমছে না অস্ট্রেলিয়ার জন্য।


গতকাল অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে আসা মার্শের কণ্ঠেও ছিল ডাচদের প্রতি সমীহ, ‘কম শক্তিশালী দলগুলোও ভালো করছে। আমার মনে হয়, বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য দারুণ একটি দিক; বিশেষ করে এমন টুর্নামেন্টে যেগুলো মাঝেমধ্যে দীর্ঘ হতে পারে। এই ম্যাচ আমাদের কাছে অন্য সব ম্যাচের মতোই। আমরা নেদারল্যান্ডসকে সম্মান করি, তারা ভালো ক্রিকেট খেলছে। তাদের বিপক্ষে ম্যাচ কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে।’ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খুব বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই অস্ট্রেলিয়ার। এখন পর্যন্ত দুই ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়ে দুটিতেই জিতেছে তারা। দুই দেখাই হয়েছিল বৈশ্বিক আসরে। ২০০৩ সালে জয় ছিল ৭৫ রানে, পরের আসরে ২২৯ রানে। ওই দুই আসরে শুধু নেদারল্যান্ডস নয় কোনো দলই হারাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়াকে।


পরিসংখ্যান অজিদের পক্ষে থাকলেও মার্শ বললেন মাটিতেই পা রাখছেন তারা, ‘আমার মনে হয় বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া সব দলের জন্য প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচই সহজ নয়। প্রতিটি ম্যাচেই বেশ চাপ থাকে।’ অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিং জুটিতে এই ম্যাচে আসতে পারে পরিবর্তন। চোট কাটিয়ে এরই মধ্যে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া ট্রেভিস হেডকে ফেরানো হতে পারে একাদশে। প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি আগেই বলে রেখেছিলেন, হেড ফিরলে তাকেই নামানো হবে ওপেনিংয়ে। এতে তিনে খেলতে হবে এই পজিশনে দারুণ পারফরম করা মার্শকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান বললেন, তার এতে আপত্তি নেই।


কাল অনুশীলনের সময় হাতে চোট পেয়েছেন তারকা ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ। মার্শ অবশ্য নিশ্চিত করেছেন, গুরুতর কিছু নয়। শক্তি-সামর্থ্যে পিছিয়ে থাকলেও অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে আত্মবিশ্বাসের কমতি থাকার কথা নয় নেদারল্যান্ডসের। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও টেস্ট খেলুড়ে দল বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডেতে হারানোর অভিজ্ঞতা আছে তাদের। সেখান থেকেও আত্মবিশ্বাসের রসদ তারা নিতেই পারে। শুধু তা-ই নয়, শক্তিতে পিছিয়ে থাকা দল আফগানিস্তান এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পর হারিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। ডাচদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে আফগানরাও। কমলা জার্সিধারীদের নাচ দেখা যাবে নাকি উল্লাসে মাতবে হলুদ জার্সিধারীরা, সেটা তোলা থাক সময়ের হাতে। আরসি-০২