সিলেট মিরর ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
০৪:৪৮ অপরাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
০৪:৪৮ অপরাহ্ন
সাংবাদিকতা নিজে আয়না ঘর হয়ে উঠেছিল মন্তব্য করে প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন, আয়না ঘর এক জায়গায় ছিল না। আপনার শহরেও ছিল। ছাত্রলীগের আয়নাঘর, যুবলীগের আয়নাঘর। সাংবাদিকতা নিজে একটা আয়না ঘর হয়ে উঠছিল।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার কৌশল ছিল কিছু লোককে ক্ষমতার সুবিধাভোগী বানিয়ে ফেলা। তাদেরকে পুরস্কার দেওয়া, শিল্পী, সাহিত্যিক, অধ্যাপক, কবি, সাংবাদিক এদেরকে।’
আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সিলেটের জিন্দাবাজারে ইমজা মিলনায়তনে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান চৈতন্য আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ও সংস্কৃতির দ্বিধাদ্বন্দ্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
চৈতন্যের প্রকাশক রাজীব চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাংস্কৃতিকর্মী লুবনা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় আলোচনায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল বাসিত শেরো, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ফারজানা রনি, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘যখন জনগণ শাসক বদলাতে পারে না তখন শাসক জনগণ বদলিয়ে ফেলে। আমাদেরকেও বদলে দিয়েছে। যেখানে দুই আড়াই হাজার কিশোর-তরুণকে হত্যা করা হলো বর্বরভাবে।’ আয়নাঘর সংস্কৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আয়নাঘর শুধু এক জায়গায় ছিল না, সারা দেশে আপনার শহরে আয়নাঘর ছিল। ছাত্রলীগের আয়নাঘর, যুবলীগের আয়নাঘর। সাংবাদিকতা নিজে একটা আয়নাঘর হয়ে উঠছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘আজকে এক খবর এসেছে, এক সম্পাদক, তিনি রিমাণ্ডে গিয়ে আলেমদের জেরা করতেন। আমি নিজে কয়েকজন ক্রাইম রিপোর্টারকে চিনি। যারা হেসে হেসে বলতেন,আমি তো উনার সঙ্গে ছিলাম। তারপরে তো ক্রসফায়ারে দিয়ে দিল। এই লোকগুলোর পাশে আমরা মিশছি ১৫ বছর। মিশতে মিশতে আমাদের ভেজাল ঢুকে বিকার ও রাগ তৈরি হয়েছে। সেই রাগ থেকে যদি কেউ ৩২ নম্বর ভাঙতে যায় তার বিচার আমরা কোন মাপকাঠিতে করব।’
আওয়ামী লীগের কৌশলের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার কৌশল ছিল কিছু লোককে ক্ষমতার সুবিধাভোগী বানিয়ে ফেলা। তাদেরকে পুরস্কার দেওয়া, শিল্পী, সাহিত্যিক, অধ্যাপক, কবি, সাংবাদিক এদেরকে। যারা শুনবে না তাদের আয়নাঘরে পাঠিয়ে দেওয়া।’
ভোটের দরকার না থাকায় আওয়ামী লীঘ প্রশাসনে ঝুকেছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরির সীমা সে প্রচুর বাড়ালো। কারণ তার ভোটের দরকার নাই যেহেতু, প্রশাসন দরকার। অফিসার দরকার। শেখ হাসিনার আমলে পুলিশের সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়ল, ক্যান্টনমেন্ট কয়েকগুণ বাড়ল, নগরায়ন কয়েকগুন বাড়ল্ নগরগুলো একটা দুর্গ সংস্কৃতি ঘরে তুলে। আমাদের নগর বিরুদ্ধে একটা দুর্গ।’
তিনি বলেন, ‘যখন হেফাজতের লোক সারা দেশ থেকে ঢাকায় আসে আমি নগরবাসীর সুশীল সমাজ মধ্যে, মধ্যবিত্তের মধ্যে, প্রগতিশীলদের মধ্যে আতঙ্ক দেখেছি। কিন্তু ঢাকার রিকশাওয়ালাদের মধ্যে ওই আতঙ্ক দেখিনি। তার মানে পরিস্কার আমাদের দেশে যে কলোনিয়ার বা জমিদারি সংস্কৃতি আছে সেটাই আমাদের এই স্বাধীনতার পরে আরো বহাল করেছে, আওয়ামী লীগ এই জিনিসটা, অন্যরাও হচ্ছে অগণতান্ত্রিক, কিন্তু আওয়ামী লীগ অগণতান্ত্রের সঙ্গে একটা মহিমা যুক্ত করেছে, যে অগণতান্ত্রই মহান, কারণ এটা বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এটা জাতীর পিতার ধর্ম। এবং আমাদের এই ধর্মের একটা তীর্থ আছে, সেটা হচ্ছে দিল্লি।’
এএফ/০৫