নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ০১, ২০২৫
০৪:৫৯ অপরাহ্ন
আপডেট : মার্চ ০১, ২০২৫
০৫:০২ অপরাহ্ন
সিলেটের মুদ্রণশিল্পের জগতে ‘চলন্তিকা প্রিন্টার্স’ এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে। ১৯৭৫ সালের ৩ জানয়ারি প্রিন্টার্সের শুরু থেকেই নিরবচ্ছিন্ন সেবার মধ্য দিয়ে এ-প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছে। শুধু তাই নয়, প্রেসের সকল কর্মীর জীবনমানের উন্নয়ন ও আয়ের একটি অংশ শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজ সেবার কাজে ব্যয় করা হয়। মানুষের মন জয় করে প্রতিষ্ঠানটি সাফল্যের সঙ্গে সুবর্ণজয়ন্তী পালন করে গত ৩ জানুয়ারি। এ উপলক্ষ্যে চলন্তিকা প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী জ্যোতির্ময় সিংহ মজুমদার চন্দন সম্পাদিত ‘চলন্তিকা’ নামের স্মারকগ্রন্থটি সিলেটের মুদ্রণজগতের এক ঐতিহাসিক দলিল। সেই সঙ্গে স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বইয়ের উপর লেখকদের আলোচনা ও সিলেটের গুণী শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এক অনাবিল আনন্দের যোগান দিয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যে ৬টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলা সিলেটের চৌহাট্টাস্থ সিংহ বাড়িতে ‘চলন্তিকা’ স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সিলেটের বিশিষ্টজনেরা তাদের বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।
বক্তারা বলেন, এই অনুষ্ঠানটি প্রকাশনা ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান পালনে এক নতুন দিক নির্দেশনাও দিয়েছে। কারণ অনুষ্ঠানে ছিলেন না কোনো প্রধান কিংবা বিশেষ অতিথি। ছিলেন না কোনো সভাপতি। অথচ সিলেটের সকল শ্রেণি পেশার অগ্রসরমান বিজ্ঞজনের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
সন্ধ্যে ৬টায় ঘড়ির কাটায় কাটায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। একে একে মঞ্চের সামনে এসে আসন গ্রহণ করেন শিক্ষাবিদ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, অধ্যাপক গ ক ম আলমগীর, অধ্যাপক ও সিলেট শিক্ষাবোর্ডের সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন চন্দ্র পাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায়, কবি ও গবেষক ড. মোস্তাক আহমাদ দীন, নজরুল সংগীত শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রানা কুমার সিনহা, সাহিত্যিক জামান মাহবুব, রবীন্দ্র গবেষক মিহির কান্তি চৌধুরী। চলন্তিকা প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী ও ‘চলন্তিকা’ সংকলনের সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিংহ মজুমদার চন্দন উপস্থিত অতিথি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিয়ে মঞ্চে এসে গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। তবে এই পর্বের নাম দেওয়া হয় ‘পুষ্প আবরণ উন্মোচন’। সেখানে অতিথিদের পক্ষ থেকে ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ বলেন, ‘আমি চলন্তিকা প্রিন্টার্স সুবর্নজয়ন্তী স্মারক-সংকলনটির পুষ্প আবরণ উন্মোচন করে সুধীসমাজ ও পাঠকবৃন্দের উদ্দেশ্যে নিবেদন করছি।’ এরপর অন্যান্য অতিথিরা অনুভ‚তি ব্যক্ত করেন।
সঞ্চালক সঞ্জয় কুমার নাথ শুরুতেই জানিয়ে দেন সংগীত, নৃত্য ও কবিতা আবৃত্তির ফাঁকে দুজন করে এসে এক মিনিটের অনুভূতি প্রকাশ করে যাবেন। এজন্য মঞ্চের এক দিকে রাখা হয় দুটি চেয়ার। এভাবে সাংস্কৃতিক ও আলোচনার সেতুবন্ধ তৈরি করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জ্যোতির্ময় সিংহ মজুমদার চন্দন, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন লেখক ও প্রামাণ্যকার নিরঞ্জন দে যাদু।
একক ও সম্মেলক সংগীত পরিবেশ করে আনন্দলোক, গীতবিতান, নজরুল সংগীত পরিষদ। একক সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, রানা কুমার সিনহা ও অনিমেষ বিজয় চৌধুরী।
নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যরথ ও নৃত্য মঞ্জুরী। একক আবৃত্তি করেন অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায়, অর্চিতা ও ঐশ্বর্যাসহ একাধিক আবৃত্তি শিল্পী। স্বরচিত ছড়া পড়েন ছড়াশিল্পী অজিত রায় ভজন ও নিরঞ্জন চন্দ্র চন্দ। সঞ্চালনা সহযোগী পারমিতা দাসের উপস্থাপনায় অনুভূতি প্রকাশ করেন-বিশিষ্ট সাংবাদিক ও দৈনিক সিলেট মিরর-এর সম্পাদক আহমেদ নূর, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দেব, কবি পুলিন রায়, কবি সুমন বনিক, অধ্যাপক অনবীর রায়, অধ্যাপক কৃষ্ণপদ সূত্রধর, অধ্যাপক নিয়াজ উদ্দিন, নাট্যকার বিমল ভৌমিক, সংগঠক চন্দন দাশ, অসিত সূত্রধর, পূরবী চ্যাটার্জী, কবি ও প্রকাশক নাজমুল হক নাজু, বেলাল আহমদ, লেখক বিনয় ভ‚ষণ তালুকদার, ব্যাংকার জ্যোতি মোহন বিশ্বাস, অরূপ শ্যাম বাপ্পী প্রমুখ।
সমাপনী বক্তব্য দেন প্রভাতী সিংহ মজুমদার ও পরমা সিংহ মজুমদার।