সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ২০, ২০২৫
০৩:২১ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ২০, ২০২৫
০৩:৫৭ অপরাহ্ন



সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার

সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার


সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত বরখাস্তসহ কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য ‘সরকারি চাকরি আইন-২০১৮’ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, দায়িত্বে অবহেলা বা শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ ওঠার ২৫ কার্যদিবসের মধ্যেই তা নিষ্পত্তি করা যাবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংশোধিত আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে তদন্ত, কারণ দর্শানো এবং সিদ্ধান্তসহ সব প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। জবাব না দিলেও অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চালু থাকবে। তবে অভিযুক্ত চাইলে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করতে পারবেন।

নতুন খসড়ায় বলা হয়েছে, দাবি আদায়ে সভা-সমাবেশ, অবস্থান, ধর্মঘট বা বলপ্রয়োগ—সবকিছুই শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবে গণ্য হবে। অন্যকে এসব কর্মসূচিতে অংশ নিতে উসকানি দিলেও একই দণ্ড প্রযোজ্য হবে। এমনকি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও চাকরি থেকে অব্যাহতির বিধান রাখা হচ্ছে।

সরকারের ভাষ্য, জনপ্রশাসনের একটি অংশের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় এই উদ্যোগ। গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার বিদায়ের পর কিছু কর্মকর্তা সচিবকে ঘিরে ধরেন, নিজেদের পক্ষে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি আদায় করেন। কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন মন্তব্য করেছেন, আবার কেউ কর্মবিরতিও পালন করেছেন।

এসব বিশৃঙ্খলার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার মনে করছে, শৃঙ্খলা রক্ষা ও কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি ঠেকাতে আইন সংশোধন জরুরি।

তবে এই খসড়া আইন প্রণয়নে কোনো জনমত নেয়া হয়নি। বরং গোপনীয়ভাবে তৈরি করে তা উপস্থাপন করা হয়েছে। এপ্রিলের মাঝামাঝি খসড়া তৈরি হয় এবং তা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় পাঠানো হয়। পরে ১৬ মে জনপ্রশাসন ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা চার অন্তর্বর্তীকালীন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন—তারা হলেন আলী ইমাম মজুমদার, আসিফ নজরুল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও আদিলুর রহমান খান। উপদেষ্টারা লিখিত মতামত দেন, যা বিবেচনায় নিয়ে খসড়ায় সংশোধন এনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের সময়ে ‘সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ’ জারি হয়েছিল। এতে শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ চার অপরাধ এবং বরখাস্ত, অব্যাহতি ও পদাবনতি—এই তিন ধরনের শাস্তির বিধান ছিল। ২০১৮ সালের আইনে তা বাতিল হয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ১৯৭৯ সালের অধ্যাদেশ পুনর্বহালের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে উপদেষ্টারা এতে সম্মত নন, তারা ২০১৮ সালের আইনের সংশোধনেই জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পক্ষে মত দিয়েছেন।

জিসি / ০৩