নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ০৮, ২০২৫
০৫:৩২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ০৮, ২০২৫
০৫:৩২ পূর্বাহ্ন
এবার ছয় দফা দাবিতে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) থেকে এই ধর্মঘট শুরুর ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস মালিক সমিতি এবং সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মবিরতির ফলে মঙ্গলবার থেকে সিলেটে গণপরিবহনসহ কোন যানবাহন চলবে না বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, ধর্মঘট কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বিমানের যাত্রী বহনকারী গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স ও পরীক্ষার্থীদের বহনকারী যানবাহন। কর্মসূচি কঠোরভাবে পালনের জন্য সিলেটের সর্বস্তরের পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন।
এর আগে রবিবার প্রশাসনকে দাবি পুরণে স্মারকলিপি দিয়ে মঙ্গলবার থেকে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরুর ঘোষণা দেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তবে রবিবার রাতে এক সভায় সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি লোকমান আহমদ ধর্মঘট প্রত্যাখান করে বাস চলবে বলে ঘোষণা দেন।
ফলে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি নিয়ে দ্বিদ্বা-বিভক্তি দেখা দেয়। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মলনে পরিবহন-মালিক সমিতির নেতারা জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু হবে। দাবি পুরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
আগে তাদের পাঁচ দফা দাবি থাকলেও দাবির মধ্যে সিলেটের জেলা প্রশাসকের প্রত্যাহারের দাবি যুক্ত করা হয়।
৬ দফা দাবিগুলো হচ্ছে- সড়ক পরিবহণ আইন ২-১৮ এর ৩৬ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতা বলে সরকার বাস মিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০, ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যানের ক্ষেত্রে ১৫ ও সিএনজি ইমা ও লেগুনার ক্ষেত্রে ১৫ বছর ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করার প্রজ্ঞাপন বাতিল, সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল এবং পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, বিআরটিএ কর্তৃক গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের ছাড়পত্র বাতিল ও গণপরিবহণের উপর আরোপিত বর্ধিত ট্যাক্স প্রত্যাহার, সিলেটের সব ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ, বিদ্যুতের মিটার ফেরত ও ভাঙচুরকৃত মিলের ক্ষতিপূরণ এবং গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর বালুর ক্ষতিপূরণ, সিলেটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে প্রত্যাহার এবং বালু পাথরসহ পণ্যবাহি গাড়ির চালকদের হয়রানি না করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ময়নুল হক বলেন, ‘লোকমান আহমদ কে? তাকে আমরা চিনি না। তার কোন গাড়ি নেই। তিনি বাস মালিক সমিতির নেতাও নন। তিনি আমাদের কর্মসূচির সঙ্গে আছেন কি নাই, তাতে কিছু আসে যায় না।আমরা দাবি আদায়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
তিনি আরো বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি বন্ধ। এতে পাথর সংশ্লিস্ট সকলে চরম দুর্ভোগে আছে। সরকার পাথর লুটপাট বন্ধ করতে না পারলেও বৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পরিবহন করতে দিচ্ছে না।’
এদিকে সিলেটের ট্রাক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে পুরো জেলায় শনিবার থেকে ৭২ ঘণ্টার পণ্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে।
এএফ/০১