সিলেট মিরর ডেস্ক
আগস্ট ০৯, ২০২৫
০৫:০২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ০৯, ২০২৫
০৫:০২ পূর্বাহ্ন
সিলেট শহর থেকে অনেক দূরের একটি জনপদ। সেই জনপদের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় এ+ পেয়েছে কয়েকটি ছেলেমেয়ে। অত্যন্ত মেধাবী ওরা। ওদের বহুদূর যাওয়ার বাসনা জীবনে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ+ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মুহিবুর রহমানকে। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে নির্ধারিত সময়ে ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাসহ যোগ দিলেন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানের পর ফটোসেশান শেষ করে অফিসে গিয়ে বসলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কর্মকর্তাগণ মুহিবুর রহমানকে জানালেন, এ+ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী। কিন্তু সিলেটে গিয়ে ভালো কলেজে পড়ার মতো সামর্থ তাদের নেই। তিনি সাথে সাথে তাঁদের বললেন, আপনারা তাদের নিয়ে আসেন। মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন তাদের পাশে থাকবে ইনশাল্লাহ। কয়েকদিন পরেই তিনজন শিক্ষার্থীসহ প্রধান শিক্ষক এলেন। অধ্যাপক মুহিবুর রহমান তাদের অবাক করে দিয়ে জানালেন, ওদের কলেজের ভর্তি ফি, মাসিক টিউশন ফি, হোস্টেলর মাসিক ফি, বই-খাতা, কলেজ ড্রেস থেকে শুরু করে সবকিছুর ব্যয়ভার বহন করবে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন।
শুরু হলো তিন স্বপ্নবান শিক্ষার্থীর স্বপ্নযাত্রা। সাথে আছেন মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন তথা ফাউন্ডেশনের কর্ণধার অধ্যাপক মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান। দুই বছর পরে ওরা এ+ পেয়ে পাশ করলো এইচএসসি । পাশের পরও ফাউন্ডেশন তাদের পাশে থাকলো। তারা নামলো মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধে। অত্যন্ত সফলভাবে দুইজন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেল সিলেট এম এজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে এবং একজন ভর্তি হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ।
ওরা এখন তাদের সফল স্বপ্নের কাছাকাছি। এদের মেধার স্পর্শে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। স্যালুট মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মুহিবুর রহমানকে। প্রতিবছর যার কল্যাণে অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের স্বপ্নপূরণের সুযোগ পাচ্ছে। উনার নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ, সিলেট কমার্স কলেজ, ইডেন গার্ডেন মহিলা কলেজে মেধাবী শিক্ষার্থীরা যেমন খুঁজে পাচ্ছে তাদের জীবন গড়ার সুবর্ণ সুযোগ, তেমনি এই প্রতিষ্ঠানগুলো বছর-বছর তৈরি করে যাচ্ছে শত শত মেধাবী শিক্ষার্থী। সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ প্রতিষ্ঠার এক যুগের মধ্যেই জন্ম দিয়েছে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারসহ অনেক সফল মানুষ। যা অনেক অর্ধ-শতাব্দী বয়স্ক প্রতিষ্ঠানও পারে না। আর সিলেট কমার্স কলেজের কৃতিত্বের কথা সিলেটের সর্বমহলে জানা। ২০০৯ সালে সিলেট শিক্ষাবোর্ডে প্রথম স্থান অর্জনকারী এই কলেজ আজও কমার্স শাখায় সর্বোচ্চ এ+ প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের রেকর্ড ধরে রেখেছে। এই কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা বিসিএস ক্যাডার থেকে শুরু করে দেশে-বিদেশে আজ অনেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত।
অধ্যাপক মুহিবুর রহমান জানান, আর্তমানবতার সেবার ব্রত নিয়ে অসচ্ছল পরিবারের মেধাবীদের পাশে আছে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন। সবসময় থাকবে অতন্দ্র প্রহরীর মতো। মেধাবীদের মিলমেলায় পরিণত হবে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর আঙিনা। তাই মেধাবীদের উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এসো মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের ছায়াতলে, তোমাদের স্বপ্নের বীজ বপনের উর্বর মৃত্তিকায়।
আর্তমানবতার সেবায় যে নিয়োজিত থাকে, আল্লাহপাক তাকে সাহায্য করেন। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে- ‘কোনো বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে, আল্লাহতায়ালাও ততক্ষণ তাকে সাহায্য করতে থাকেন।’ (তিরমিজি)। অপর এক হাদিসে নবী করিম (সা.) এরশাদ করেন- ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে না, আল্লাহও তার প্রতি রহমত করেন না।’ (তিরমিজি)। এই হাদিস দুটি দ্বারা স্পষ্ট প্রতিয়মান হলো যে, যারা আর্তমানবতার পাশে দাঁড়ায়, আল্লাহর রহমত ও সাহায্য তাদের জন্য অবারিত হয়ে যায়। অধ্যাপক মুহিবুর রহমান আর্তমানবতার সেবায় থাকাকে ইবাদত হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আর্তমানবতার সেবায় নিবেদিত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।
এএন/০১