আশ্রয় নিতে ভারতে অনুপ্রবেশ, আওয়ারী লীগ পরিচায়ধারী তিন সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৫

আবির হাসান মানিক, তাহিরপুর


আগস্ট ১১, ২০২৫
০৩:৫৯ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ১১, ২০২৫
০৩:৫৯ অপরাহ্ন



আশ্রয় নিতে ভারতে অনুপ্রবেশ, আওয়ারী লীগ পরিচায়ধারী তিন সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৫


ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে মেঘালয় রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি হিলসের রংদাংগাই গ্রামের এক যুবকের ওপর হামলা, অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ৪ বাংলাদেশি নাগরিককে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়। এদের তিনজন নিজেকে আওয়ামী লীগের সদস্য বলে দাবি করেছেন। এ ঘটনার একদিন পর গতকাল রবিবার আরো এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে। 

দ্য শিলং টাইমস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি হিলসের পুলিশ সুপার (এসপি) বি. জিরওয়া জানান, গ্রামবাসীদের সহায়তায় রবিবার সকাল প্রায় ৭টার দিকে খোঞ্জয়ের কাছে গিলাগোড়া গ্রাম থেকে সর্বশেষ সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তি তাহিরপুর উপজেলার কলাগাঁও গ্রামের মুবারক মিয়া। 

এর আগে শনিবার গ্রেপ্তার হওয়া ৪ বাংলাদেশি নাগরিকের পরিচয় হলো- জামালপুর জেলার জাহাঙ্গীর আলম (২৫) ও মারুফুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলার সায়েন হোসেন এবং কুমিল্লার মাহফুজ রহমান। তাঁদের মধ্যে মারুফুর রহমান নিজেকে পুলিশ সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। 


 শুক্রবার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যর দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি পাহাড় জেলার রংদাংগাই গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। রবিবার (১০ আগস্ট) গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে হাজির করা হয়েছে বলেও ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।

শিলং টাইমস পত্রিকা অনলাইন ভার্সনে আজ সোমবার '5th Bangladeshi criminal in police net for attack on youth in SWKH' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এদিকে ভারতীয় বিএসএফ এবং মেঘালয় পুলিশের যৌথ অভিযানে ধরা পড়া চার বাংলাদেশির ভিডিও প্রকাশ করে বিএসএফ। এতে দেখা গেছে দক্ষিণ পশ্চিম খাসি হিলে এক যুবককের উপর হামলার ঘটনায় আটক ৪ বাংলাদেশি নাগরিককে হিন্দিতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়। 

শিলং টাইমস এ প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার (৮ আগস্ট) সন্দেহভাজন বাংলাদেশি সশস্ত্র অপরাধীদের একটি দল রংদাংগাই গ্রামের ২১ বছর বয়সী বলসরাং এ. মারাকের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে অপহরণ করে। হামলার পর পুলিশ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী খোঞ্জয় এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায়। পরে শনিবার ৪ সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যার মধ্যে একজন নিজেকে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল বলে দাবি করেছেন। খোঞ্জয় গ্রামের বাসিন্দারা সকালে প্রথম অভিযুক্তকে আটক করেন, আর পুলিশ ও বিএসএফ যৌথ অভিযানে চিবক অরণ্য থেকে বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে মেঘালয়ের ‘Highland post’ এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতে প্রবেশকারীদের একজন পুলিশকে জানিয়েছে সে গেকো শিকার করছিল এবং অন্য তিনজন বলেছে- তারা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং ভারতে আশ্রয় নিতে চাই। অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে বাংলাদেশের পুলিশ কনস্টেবলের একটি আইডি, হাতকড়া, ম্যাগাজিনের কভার, পিস্তল হোলস্টার, রেডিও সেট, মোবাইল ফোন, মুখোশ, কুঠার, তার কাটার যন্ত্র ও বাংলাদেশী মুদ্রা জব্দ করেছে মেঘালয়ের পুলিশ।

সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, বাংলাদেশের তাহিরপুর সীমান্ত থেকে ভারতের ৮ কিলোমিটার অভ্যন্তরে ৪ বাংলাদেশি নাগরিককে মেঘালয় পুলিশ, বিএসএফ এবং স্থানীয় জনতা যৌথভাবে আটকের বিষয়টি জানা গেছে। যতটুকু জানতে পেরেছি, ঘটনাটি এখন মেঘালয় পুলিশ তদন্ত করছেন। বিএসএফ এর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানিয়েছেন, ঘটনার সর্বশেষ অবস্থা বিজিবিকে জানানো হবে।


এএইচএম-০১/এএফ-০২