মুহম্মদ নুরুল হকের ৩৭তম মৃত্যু বার্ষিকী

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ০২, ২০২৫
০৮:০৪ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ০২, ২০২৫
০৮:০৪ অপরাহ্ন



মুহম্মদ নুরুল হকের ৩৭তম মৃত্যু বার্ষিকী


সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও আজীবন সম্পাদক এবং মাসিক আল ইসলাহ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক মুহম্মদ নুরুল হকের ৩৭তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ (২ সেপ্টেম্বর) সোমবার। তিনি ১৯০৭ সালের ১৯ মার্চ সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

মুহম্মদ নুরুল হক সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে প্রথমে ‘অভিযান’ নামে একটি হাতে লেখা পত্রিকা বের করেন। ১৯৩১ সালে এই পত্রিকাই ‘মাসিক আল ইসলাহ’ নামে আত্মপ্রকাশ করে মুদ্রিত আকারে বের হয়। ১৯৩৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক সরেকওম এ, জেড আব্দুল্লাহর বাসভবনে এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ‘সিলহেট মুসলিম সাহিত্য সংসদ’এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এতে খান বাহাদুর দেওয়ান একলিমুর রেজা চৌধুরীকে সভাপতি,  সরেকওম এ জেড আব্দুল্লাহকে সম্পাদক এবং আল ইসলাহ সম্পাদক মুহম্মদ নূরুল হকসহ দশজনকে সদস্য করে সর্বমোট ১৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বার্ষিক অধিবেশনে নূরুল হক সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। আমৃত্যু তিনি এই দায়িত্ব পালন করে যান।

ভাষা আন্দোলনে মুহম্মদ নুরুল হক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৭ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে তিনি ছিলেন সোচ্চার। মুসলিম সাহিত্য সংসদ, মাসিক আল ইসলাহ ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে নূরুল হক সভা সমাবেশসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

নূরুল হক ১৯৬১ সালে সিলেটে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক নজরুল সাহিত্য সম্মেলনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। একই বছর তিনি রবীন্দ্র শত বার্ষিকী অনুষ্ঠানের সাহিত্য বিভাগেরও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৪৬-৪৭ সালে আসাম সেন্ট্রাল বুক কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়া, ১৯৬৫ সালে গঠিত সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি।

মুহম্মদ নূরুল হককে সাহিত্য ও সমাজসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন পদক ও সম্মানে ভূষিত করে। ১৯৭৭ সালের ১৪ এপ্রিল নূরুল হক জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৮৬ সালের ৪ জানুয়ারী বাংলা একাডেমী তাঁকে ফেলোশীপ প্রদান করে। তিনি ১৯৮৭ সালে মরহুম আমীনূর রশীদ চৌধুরী স্মৃতি স্বর্ণপদকও লাভ করেন। ১৯৮৫ সালে সিলেটের আলোচিত নাট্য সংগঠন নাট্যালোক তাঁকে সম্মাননা ও পদক প্রদান করে। এ ছাড়া, সাহিত্য ও সমাজ সেবার স্বীকৃতি স্বরূপ নূরুল হক ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান সরকার থেকে ‘তমঘা-ই-খেদমত’ উপাধি লাভ করেন। কিন্তু ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে তিনি উক্ত উপাধি প্রত্যাখ্যা করেন। তিনি সিলেট বেতারের জন্মলগ্ন থেকে নিয়মিত কথক ছিলেন। একজন সৃজনশীল লেখক হিসেবেও তাঁর পরিচিতি রয়েছে। তাঁর ৭টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

সাহিত্য সাধনার নিরলস কর্মী, প্রচার বিমুখ এই বিরল ব্যক্তিত্ব ১৯৮৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর সিলেট শহরের দরগা মহল্লা, ঝরণারপারস্থ (পায়রা-৫৪) তাঁর নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন।


এএফ/০১