প্রাণভরে শ্বাস নিতে চাই

মাহবুবুর রহমান


মে ০১, ২০২০
০৫:৩১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ০১, ২০২০
০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন



প্রাণভরে শ্বাস নিতে চাই

বাসায় বসে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছি। কিছুই ভালো লাগছে না। টিভি আর অনলাইনে করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত সংবাদ দেখে ও পড়ে সবসময় একটা খারাপ-লাগা অনুভূতি ঘিরে রেখেছে আমায়। কোনও কাজেই স্বস্তি পাচ্ছি না। কবে এই অসহ্য ও অসহনীয় পরিস্থিতি দূর হবে, সেটাই তো বুঝে উঠতে পারছি না। উফ, আর নিতে পারছি না! খাওয়া, ঘুম, টিভি দেখা, অনলাইনে সংবাদ পড়া কিংবা মুভি দেখা-প্রতিদিনকার এই একঘেয়ে রুটিন আর টানছে না। অন্যকিছু করার শত চেষ্টা করেও এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাচ্ছি না!

বাংলাদেশে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে। মারাও যাচ্ছেন অনেক মানুষ। এসব পরিসংখ্যান শুনতে বা জানতে মোটেই ভালো লাগে না। তবে ইদানীং কয়েকজনের সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা দেখে মনে আশা তৈরি হয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা ব্যক্তিদের তালিকা দীর্ঘ হোক। তবে অবাক লাগে, যখন ফেসবুক কিংবা অনলাইনে দেখি ‘লকডাউন’ সত্তে¡ও সিলেটের অনেক মানুষ অযথাই বাসার বাইরে বেরোচ্ছেন। মনে মনে ভাবি, তাঁদের কী মরণের ভয় নাই? তাঁরা কীভাবে নিজের জীবন বাজি রেখে এমন অসচেতনতার পরিচয় দিচ্ছেন? এ ছাড়া তাঁরা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যেমন সমাজের অন্যান্যদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছেন, তেমনই তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও তো বিপদে ফেলছেন। মানুষ কেন এমন করে, আসলে কিছুই বুঝে উঠতে পারি না।  

এবার নিজের কথা বলি। করোনাকালের এই সময়টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর বার বার চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হচ্ছি। কোনও কাজেই সঠিকভাবে মনোসংযোগ করতে পারছি না। যাবতীয় দুশ্চিন্তা যেন আমার মাথায় ভর করে রয়েছে। তবে এই অবসরে, ঘরবন্দী জীবনে প্রচুর সিনেমা দেখা হচ্ছে। নানা ধরনের সিনেমা। বাংলা তো রয়েছেই, পাশাপাশি ইংরেজি, হিন্দি ও তামিলসহ নানা ভাষার বৈচিত্র্যময় কাহিনির সিনেমা দেখছি। তবে যতটুকু সময় সিনেমা দেখছি, ঠিক ততটুকু সময়ই মনটা একটু ফুরফুরে থাকে। যখন সিনেমা শেষ হয়ে যায়, তখন পুনরায় করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরে পুনর্বার। জানি, শীঘ্রই এ থেকে মুক্তি মিলবে না। তবুও আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠি, যেন-বা কিছুই হয়নি। বিশ্বাস রাখি, পৃথিবীর এ সংকট দ্রুত কেটে যাবে। আবার মানুষ মেতে উঠবে মুক্তির আনন্দে। আবার প্রাণে প্রাণ মেলাবে সবাই। সে দিনটি কবে আসবে, এই প্রতীক্ষায় কেবল এখন দিন গুনছি। দ্রুত করোনাহীন মুক্ত আকাশে প্রাণভরে শ্বাস নিতে চাই।

 

লেখক : বেসরকারি চাকুরিজীবী; সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকার বাসিন্দা।