আসুন একটু হাসি

মাসুদ পারভেজ


মে ১০, ২০২০
১২:০৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ১০, ২০২০
১২:৪৪ পূর্বাহ্ন



আসুন একটু হাসি

ঠিক এই মূহুর্তে করোনার খবর ছাড়া আর কোনো খবরে নজর আছে আপনার? নেই। দুর্নীতি, সড়ক দূর্ঘটনা কিংবা ধর্ষণ, সব খবরের ভাত মেরেছে করোনাভাইরাস। টপ লিস্টে মাসের পর মাস সেরা অবস্থান ধরে রেখে যেভাবে এগোচ্ছে তাতে করে এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত কোন সূত্রতেই বের করা সম্ভব হচ্ছে না যে, সে কোথায় গিয়ে থামবে। প্রত্যেকটি মূহুর্ত করোনার আতঙ্কে কাটছে সবার। 

দেশ জুড়ে চলছে সাধারণ ছুটি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জরুরি কাজ ছাড়া কোথাও বের হওয়া নিষেধ। নয়টা-পাঁচটা ব্যস্ত থাকা মানুষদের জন্য বাসায় বসে থাকা কতটা স্বস্তিরতা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। কপাল ভালো ইন্টারনেটের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায় না। ছড়ালে আমাদের যে কি হত তা কল্পনাতীত! এ ধরণের পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়লে চলবে না, হতাশ হলে চলবে না। ‘যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ’। পৃথিবীব্যাপি এত এত মৃত্যুর ভীড়েও আমাদেরকে বেঁচে থাকার গল্প বুনতে হবে, জীবনের গল্প বলে যেতে হবে। আর তার জন্য অবশ্যই মন ভালো রাখতে হবে। মন ভালো রাখার নিমিত্তে, গল্প পড়ে আসুন একটুখানি হাসার চেষ্টা করি। গল্পগুলো ফেসবুক থেকে নেওয়া।

এক স্ত্রীর খুব সন্দেহ বাতিক। বিভিন্নভাবে স্বামীকে স্বন্দেহ করে সে। স্বামী অফিস থেকে এলেই চুপিচুপি তার ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করা, অফিসের ব্যাগের পকেট, জামা-প্যান্টের পকেট উল্টে-পাল্টে দেখা তার নিয়মিত কাজের অংশ। এই ব্যাপারটা স্বামীও জানে তবে শান্তির চিন্তা করে স্ত্রীকে কিছু বলে না। করোনার ছুটিতে অফিস বন্ধের কারণে স্বামী এখন অফিস যেতে পারছে না। স্ত্রী তার বহুদিনের অভ্যেস ছাড়ে কি করে। একদিন স্বামী বাথরুমে ঢুকলে তার মোবাইল ফোন সেটটি হাতে নিয়ে কললিস্ট দেখছে। একটি নাম্বারে তার চোখ আটকে গেল, COVID-19। COVID-19 নাম দেখে তার চুড়ান্ত সন্দেহ হলো। সে ওই নম্বারে কল দিল। পাশের রুমে থাকা তার নিজের ফোনটি বাজতে শুরুকরলো!

গল্পগুলোতেও কেমন করোনা ভর করছে তাই না! অবস্থা এখন এতটাই মারাত্মক হাসির গল্পেও এই ভাইরাসটি হানা দিচ্ছে। আসুন করোনামুক্ত গল্প শুনি। সাঁতার না জানা বোকা-সোকা এক লোক মন খারাপ নিয়ে নদীর ধারে আনমনে বসে আছে। একটি প্লাস্টিকের খালি বোতল কিনার দিয়ে ভেসে আসতে দেখে সে একটুখানি নেমে বোতলটি তুলতে গিয়ে নদীতে পড়ে গেল লোকটি। সাঁতার না জানায় সে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিল। পাশ দিয়ে এক লোক হেঁটে যাচ্ছিল। নদীতে পরা লোকটি তাকে উদ্দেশ্য করে বলল ‘ও ভাই... আমাকে বাঁচাও... আমি সাঁতার জানিনা... ডুবে যাচ্ছি’! হেঁটে যাওয়া লোকটিও চেচিয়ে বলল, ‘সাঁতার জাননা তো কি হয়েছে... এই সুযোগে সাঁতার শিখে নাও... এমন ভালো সুযোগ আর পাবে না’!

বিশাল কেক কেটে শতায়ূ এক বৃদ্ধের জন্মবার্ষিকী উদযাপন চ্ছে। আমন্ত্রিত অতিথিদের ভেতর একজন বৃদ্ধের কাছে জানতে চাইলো ‘আপনার এই দীর্ঘ জীবনের রহস্য কি’? বৃদ্ধ উত্তর না দিয়ে অন্য কাজ করতে লাগলো। উৎসাহী হয়ে আরেকজন অতিথি জানতে চাইল ‘বলুন না কি করে এতদিন সুস্থ অবস্থায় বেঁচে আছেন?’ বৃদ্ধ বললেন ‘এখনই ঠিক বলা যাচ্ছে না’। অতিথি বলল ‘কেন?’ বৃদ্ধ বলল ‘একটি ভিটামিন ট্যাবলেট কোম্পানি, একটি আয়ূর্বেদিক কোম্পানি আর একটি ফলের জুস তৈরির কোম্পানির সাথে দরদাম চলছে, ফাইনাল হলেই জান াযাবে!’

পাঠক, হাসির গল্পে কতটা হেসেছেন জানি না। তবে ঘরবন্দি এই সময়ে হাসির লেখা পড়ে মনটা যদি একটু হালকা হয়, ক্ষতি কি। যাদের হাসি আসছে না তারাও ঠিক আছেন। সময়টা আসলে হাসাহাসির নয়। পৃথিবীব্যাপি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। খুব ভয়ংকর একটি সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি আমরা। আগামীদিনগুলোতে আরও কতটা অসহায় হয়ে পড়ব কেউ বলতে পারছি না। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের নিজেদের সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন ছাড়া কার্যত করার কিছু নেই। ঘরে থাকবেন অবশ্যই, খুব জরুরি কাজে বাইরে গেলেও নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করবেন এবং সময় নিয়ে বেশি বেশি হাত ধুবেন।   

 

লেখক : গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিকর্মী