এমন ঈদ কেউ দেখেনি

মিনার মাহমুদ


মে ২৫, ২০২০
০২:৫৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ২৫, ২০২০
০২:৫৯ পূর্বাহ্ন



এমন ঈদ কেউ দেখেনি

এমন ঈদ দেখেনি কেউ কোনোদিন। কোনোদিন আসেনি এমন ঈদ। ঈদের মূল কথা হলো আনন্দ। কিন্তু মৃত্যু যখন দুয়ারে দাঁড়িয়ে তখন সব আনন্দ ফিকে হয়ে যায়। অধরা থেকে যায়। আমাদেরকে বিমোহিত করে না কোনো উৎসব। 

ঈদের আগের দিন সর্বোচ্চ ২৮ জন মানুষ মারা গেলেন। প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ আক্রান্ত। সামনে আমাদের কী বিপদ অপেক্ষা করছে, আমরা কেউ জানি না। গোটা বিশ্ব জানে না বিশ্ববাসীর কী ভবিষ্যৎ।

এক মাস সিয়াম সাধনার পর যথারীতি ঈদুল ফিতর এলো। কিন্তু আনন্দ আসেনি। বেশির ভাগ মানুষ যেখানে দুবেলা আহার প্রাপ্তির অনিশ্চয়তায়, সেখানে নতুন বস্ত্র, সেমাই-ফিরনীর কথা অনেকে ভাবতেই পারেন না।

ঈদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত বন্ধ থাকে। কিন্তু এবার সেই ছুটির বালাইও নেই। ঈদের নামাজ মসজিদে পড়তে যাইনি, এমন দিন কোনোদিন আসবে ভাবিনি। ঈদে বেড়াতে যেতে পারব না, ঈদি দিতে পারব না, নিতেও পারব না। এটি ভাবতে না পারলেও মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।

খবর আছে, এবার অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা বেতন পেলেও বোনাস পায়নি। যেখানে বোনাসই নেই, সেখানে ঈদের আনন্দ পর্ব কীভাবে আসতে পারে! পারে না।

গত মার্চ মাস থেকে বলতে গেলে মানুষগৃহবন্ধী। আর্থিকভাবে মানুষ বিপর্যস্ত। এমন এক সময় এসেছে যখন অনেক নি¤œ মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরাও খেয়ে না খেয়ে দিন অতিবাহিত করছেন। অবশ্য এটি ঠিক যে, সরকারের সাহায্যের পাশাপাশি অনেক ব্যক্তি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরবে এবং নীরবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। 

আমি মনে করি এবং বিশ্বাস করি, জীবনের অনেক ঈদ তো আমরা আনন্দে যাপন করেছি। এবার না হয়, যার যা প্রাপ্তি আছে, তা দিয়ে নিজের বস্ত্র ও খাদ্যদ্রব্যের বাহুল্যতা ত্যাগ করে, মানুষের ন্যূনতম বেঁচে থাকার জন্য খাবার তুলে দিতে হবে আমাদের। মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনের কাছে নিজের ঈদের আনন্দ খোঁজে নেওয়াই মনুষ্যত্বের পরিচয়। সেই পরিচয়ই হোক আজ আমাদের।

লেখক : আইসিটি উদ্যোক্তা