মাহবুবুর রশীদ, কানাইঘাট
মে ২৬, ২০২০
০৭:১৮ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ২৬, ২০২০
০৭:১৮ অপরাহ্ন
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় বৈশ্বিক মহামারী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও আতঙ্ক। বিশেষ করে কানাইঘাট পৌর এলাকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে শুরু করে চিকিৎসকসহ সকল মহলে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।
কানাইঘাট পৌর শহরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং এর আশপাশের রায়গড় ও ডালাইচর এলাকায় ইতোমধ্যে ৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. উৎপলেন্দু বিশ্বাস, উপজেলা পরিষদের সিএ রায়গড় গ্রামের বিপ্লব কান্তি দাস অপু, হাসপাতালের অফিস সহকারী জামাল উদ্দিন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন মা ডায়গনস্টিক সেন্টারের ডিএমএফ রায়গড় গ্রামের দ্বীপ চৌধুরী, তার ভাই একই ডায়গনস্টিক সেন্টারে কর্মরত সাগর চৌধুরী, ডায়গনস্টিক সেন্টারের পরিচালক হারুন রশিদ, দি আজাদ ডায়গনস্টিক সেন্টারের ল্যাব টেকনিশিয়ান পাবনার বাসিন্দা ডালাইচরে বসবাসরত সাখাওয়াত হোসেন, বীরদল পুরানফৌদ গ্রামের হাসপাতাল গেট সংলগ্ন রাহুল ফার্মেসির মালিক অজিত দাস এবং রায়গড় গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাসরত চতুল ঈদগাহ বাজারের একটি ফার্মেসির মালিক ডিএমএফ মো. কিবরিয়া। তারা সবাই পৌরসভার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করেন।
করোনায় আক্রান্ত এ ৯ জনের মধ্যে ৮ জন গত তিনদিনে আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে ডা. উৎপলেন্দু বিশ্বাস ও হাসপাতালের অফিস সহকারী জামাল উদ্দিনকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
পৌরসভার অফিসপাড়া ও থানা এলাকায় করোনার আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরণের উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যারা চিকিৎসক উৎপলেন্দু বিশ্বাসের কাছে চিকিৎসাগ্রহণ করেছিলেন এবং হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত ও হাসপাতালের পাশে অবস্থিত মা-মনি ও আজাদ ডায়গনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসাসহ অন্যান্য পরীক্ষা করেছেন, তারাও রয়েছেন উৎকন্ঠায়।
কানাইঘাটে সর্বাধিক সংখ্যক করোনায় আক্রান্ত হন ঈদের দিন রাতে (গতকাল সোমবার) ৮ জন। তাদের মধ্যে আছেন, ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্স কানাইঘাট অফিসে কর্মরত সদর ইউপির নিজ চাউর দক্ষিণ গ্রামের আবুল কালাম, ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের তিনচটি নয়াগ্রামের নুরুল হকের পুত্র চট্টগ্রামফেরত গার্মেন্টস শ্রমিক জুবায়ের আহমদ ও রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের খালপার গ্রামের সুনামগঞ্জ ফেরত ধানকাটা শ্রমিক আব্দুল খালিক।
ঈদের দুইদিন আগে আক্রান্ত হন আরও ৭ জন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত উপজেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন আর তাদের মধ্যে ১ জন সুস্থ হয়েছেন। গত তিনদিনে করোনায় আক্রান্ত অনেকের বয়স ২০-৩০ এর কোঠায়।
হাসপাতালের এক চিকিৎসকসহ কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এবং হাসপাতালের আশপাশের এলাকায় করোনার প্রার্দুভাব দেখা দেওয়ায় সচেতন মহল কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আশপাশের এলাকা লকডাউন করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান বলেন, করোনার প্রার্দুভাব থেকে বাঁচতে হলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রশাসন আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে মানুষকে সচেতন করার জন্য, কিন্তু করোনা একটি প্রাণঘাতি ও ছোঁয়াচে রোগ জানার পরও আমরা সচেতন হচ্ছি না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লকডাউন করা জেলা সিভিল সার্জনের এখতিয়ারে রয়েছে। তারা যদি মনে করেন হাসপাতাল লকডাউন করা দরকার, তাহলে সেই আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআর/আরআর-০৮