শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের গন্তব্য যে কলেজগুলো

মুহম্মদ ইমদাদ


জুন ০৩, ২০২০
০৭:২৩ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ০৩, ২০২০
০৭:২৫ অপরাহ্ন



শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের গন্তব্য যে কলেজগুলো

এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। যারা পাশ করেছে তাদের এখন প্রধান ভাবনা কোথায় ভর্তি হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতা দেখা যায় এই সময়ে। সে হয়তো একটি কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবছে। কিন্তু পরিবারের লোকজন ভাবছে অন্য কোনো কলেজের কথা। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা বেশি হয়ে থাকে।

সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ সীমিত এবং বেশিরভাগ কলেজেই সারা বছর পরীক্ষা লেগে থাকে। ফলে ক্লাস কম হয়। প্রাইভেট পড়তে হয়। সেক্ষেত্রে অভিভাবকগণ দোলাচলের মধ্যে পড়েন। ছেলেটাকে বা মেয়েটাকে কোথায় দেবেন, নিরাপদে পড়ালেখা করতে পারবে কি না—এইসব চিন্তা করতে হয়। বিশেষ করে গ্রামের স্কুলগুলো থেকে যারা ভালো রেজোল্ট করে তারা পড়ে আরও বড় বিপাকে। শহরে এসে থাকবে কোথায়? খরচ কেমন— এইসব ভাবতে হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে বাড়ির বাইরে রেখে পড়ালেখা করানো অভিভাবকেদের দুঃশ্চিন্তায় ফেলে। 

সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তির সীমিত সুযোগ এবং হোস্টেল সুবিধার স্বল্পতা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে বিপাকে ফেলে। অথচ তারা ভালো পড়ালেখা করতে চায়। ভবিষ্যতে মেডিকেলে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে স্বপ্নপূরণ করতে চায়; কিন্তু তাদের এই স্বপ্নপূরণের যাত্রায় এগুলো বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। 

আরেকটা বিষয় অত্যন্ত জরুরি, তা হচ্ছে বড় বড় কলেজগুলো বাস্তবিক অর্থে ছেলেমেয়েদের দায়িত্ব নেয় না। তারা কলেজে আসছে কি না, কোথায় থাকছে, কী করছে—এসব বিষয়ে কলেজগুলোর কোনো মাথা ব্যথা থাকে না। ফলে ছেলেমেয়েরা হঠাৎ করে বাড়ি বাইরে এসে অভিভাবকহীনতায় ভোগে। বা অভিভাবকহীনতার সুযোগে তারা খারাপ সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, ক্লাস করে না, সময়মতো পরীক্ষা দেয় না—যা একজন অভিভাবক প্রায় জানেনই না। অভিভাবকের অজান্তে তাদের সন্তানরা বিপথগামী হয়ে তাদের ভবিষ্যতকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। 

এইসব সমস্যা সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের পিতামাতাতুল্য অভিভাবক হয়ে তাদের সঠিক পথে পরিচালনা করা, ‌'প্রাইভেট পড়াকে না বলুন’ শ্লোগানকে সামনে রেখে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতি ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের ভালোভাবে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা, কলেজের নিজস্ব নিরাপদ হোস্টেলে রেখে তাদের পরিচর্যা, মেয়েদের জন্য আলাদা নিরাপদ হোস্টেল, আলাদা ক্যাম্পাস ইত্যাদির ব্যবস্থা গ্রহণ করে সিলেটের কয়েকটি প্রাইভেট কলেজ ইতোমধ্যে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। সেগুলোর মধ্যে সিলেট কমার্স কলেজ, সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ, ইডেন গার্ডেন কলেজের নাম করা যায়। সিলেট কমার্স কলেজ ২০০৯ সালে সিলেট বোর্ডে প্রথম স্থান অধিকার করার মাধ্যম্যে দেশের শিক্ষানুরাগী-মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই কলেজটি সিলেট বোর্ডের ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় সর্বোচ্চ জিপিএ- ৫ প্রাপ্ত কলেজ। যে রেকর্ডটি এখনো কোনো প্রতিষ্ঠান ডিঙাতে পারেনি। কলেজটি প্রতিবছরই সিলেট বোর্ডের প্রথম সারিতে অবস্থান করছে। মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন পরিচালিত এই কলেজটি ছাড়াও রয়েছে সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ এবং ইডেন গার্ডেন কলেজ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা ক্যাম্পাস এবং হোস্টেল সুবিধা। প্রতিটি ক্যাম্পাস ও হোস্টেল সম্পূর্ণ সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ক্লাসরুমগুলো স্মার্টসম্বলিত সম্পূর্ণ ডিজিটাল। নিয়মিত হোম ভিজিট, মূল্যায়ন পরীক্ষা, হোস্টেলে রাতের বেলা অতিরিক্ত ক্লাস গ্রহণ, নিয়মিত হোস্টেল ভিজিট, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য নিজস্ব হসপিটালসহ অনেক সুবিধা যা একজন শিক্ষার্থীর নিরাপদে পড়ালেখার পথকে সুগম করে। মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মুহিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, এই করোনা দুর্যোগের মধ্যেই কলেজগুলোর অনেক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। এবং বৈশ্বিক মহামারির কারণে এই বছর ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ভর্তিসংক্রান্ত সকল ফি-য়ের ক্ষেত্রে ২৫% ওয়েবারও ঘোষণা করা হয়েছে। মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন পরিচালিত অন্য একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান মুহিবুর রহমান একাডেমি (জাতীয় পাঠ্যক্রমের অধীনে ইংরেজি ও বাংলা ভার্সন ইনস্টিটিউট)। এবছর প্রতিষ্ঠানটির প্রথম ব্যাচ এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫সহ চমৎকার ফলাফল অর্জন করেছে। 

লেখক : ভাইস প্রিন্সিপাল, মুহিবুর রহমান একাডেমি