বেপরোয়া অটোচালক

খোরশেদ আলম


জুন ১০, ২০২০
০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১০, ২০২০
০৬:৪১ পূর্বাহ্ন



বেপরোয়া অটোচালক

সকাল ১০টা। মেজরটিলা বাজারে সিএনজি অটোরিকশার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এই করোনাকালেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিদিন অফিস করতে হয়। আমি বাধ্য হয়ে অটোরিকশার পেছনের তিনটি সিট নিই। আজও চালককে বললাম বন্দর যাব। পেছনের তিন সিটের ভাড়া দেব। বন্দর যাবে তো! আবারও চালকের নিকট থেকে নিশ্চয়তা আদায় করলাম। চালক বললেন, তিনি বন্দর যাবেন। অটোর সামনে চালকের দুই পাশে দুইজন যাত্রী। দুজনই মাস্ক ব্যবহার করেছেন। কিন্তু চালকের মাস্ক নেই। এ নিয়ে কথা বলায় চালক জানালেন, সব সময় মাস্ক পরলে তাঁর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। সুতরাং এ নিয়ে আর কথা বাড়ানো গেল না।

শিবগঞ্জ আসার পর সামনের সিটের যাত্রীরা নেমে গেলে আমি অটোতে একা হয়ে গেলাম। চালক আমাকে বললেন, শিবগঞ্জ এসে গেছি, নেমে যান। আমি বললাম, আমি বন্দর যাব বলে উঠেছি, এখানে নামব কেন? চালক নির্লজ্জের মতো বললেন, আপনি মিথ্যে বলছেন। আমি পয়েন্টে থাকা ট্রাফিক পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। কিন্তু তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে এই ঝামেলায় জড়ালেন না। এবার আমি বাধ্য হয়ে শোরগোল করলে চালক বন্দর বন্দর বলে যাত্রী ডাকতে লাগলেন। এ সময় দুজন মহিলা পেছনের সিটে উঠতে চাইলে চালককে বললাম, পেছনের তিন সিটের ভাড়া তো আমি দেব বলে উঠেছি। এবার চালক আমাকে অনুরোধ করে বললেন, ‘আমার পাশে চলে আসুন।’ এ পর্যায়ে আমার ধৈর্য্যরে বাঁধ ভেঙে গেল। আমি তীব্র প্রতিবাদ করলাম। এ জন্য আমাকে স্বভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে চালকের সঙ্গে ভীষণ তর্কাতর্কিতে যেতে হলো। অনেকক্ষণ এভাবে চলল। পরে রণে আমাকেই ভঙ্গ দিতে হলো। একাই অটোর পুরো ভাড়া পরিশোধ করব বলে, রফা হলে চালক বন্দর নিয়ে এলেন।

এখন প্রশ্ন হলো, এই যে করোনার মহামারীতে আমরা ক্রমেই মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হচ্ছি, সেখানে এসব অবুঝ লোকগুলোকে সুবুদ্ধি কে দেবে? কীভাবে তাদের বোধোদয় হবে, এখন এই প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

সিলেটের পুলিশ প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনারা কঠোর হোন। যারা নিয়ম না মানবে তাদের জরিমানা করুন। বাঁচতে হলে, কঠোর আইন প্রয়োগের বিকল্প নেই।

লেখক : বেসরকারি কর্মকর্তা