‘মাসুদ রানা’র লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন নন

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ১৫, ২০২০
০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১৫, ২০২০
০৫:১০ পূর্বাহ্ন



‘মাসুদ রানা’র লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন নন

সেবা প্রকাশনীর পাঠকপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজ মাসুদ রানার প্রথম ১১টি বইয়ের পরের ২৬০টি বইয়ের লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন নন। এর লেখক হলেন শেখ আবদুল হাকিম। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনি লড়াই শেষে রবিবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস এই রায় দিয়েছেন। যার ফলে দাবিকৃত মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি এবং কুয়াশাসিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে কপিরাইট সত্ত্ব পেতে যাচ্ছেন শেখ আবদুল হাকিম।

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী জানান, কাজী আনোয়ার হোসেন চাইলে অবশ্যই আমাদের এ রায়ের বিরুদ্ধের আবেদন করতে পারবেন। তা অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে। এখানে তিনি হেরে গেলে, হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন।

তিনি আরো জানান, শেখ আবদুল হাকিমের দাবিকৃত ২৬০টি মাসুদ রানার বইয়ের মধ্যে একটি এবং কুয়াশার ৫০টি বইয়ের মধ্যে ছয়টিতে লেখক হিসেবে তার নামে কপিরাইট করা আছে। বাকিগুলোর কপিরাইট করা নেই। তবে সেগুলো তার লেখা এটা তিনি প্রমাণ করেছেন। তবে কপিরাইট অন্তর্ভূক্তির কারণে তাকে প্রতিটি বইয়ের জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে। এর পর প্রতিটি বইয়ের লেখক হিসেবে তার নাম যাওয়ার পাশাপাশি, কপিরাইটও তার হয়ে যাবে।

গত বছরের ২৯ জুলাই ২০১৯ তারিখে শেখ আব্দুল হাকিম ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০ টি এবং ‘কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে মালিকানাস্বত্ব দাবি করে সেবা প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী কাজীআনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করেন।

বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রায়ে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে কপিরাইট বোর্ড বা বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যন্ত আবেদনকারীর দাবিকৃত ও তালিকাভুক্ত বইগুলোরপ্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হলো। এ ছাড়া প্রতিপক্ষকে আবেদনকারীর কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনকৃত প্রকাশিত বইগুলোর সংস্করণ ও বিক্রিত কপিরসংখ্যা এবং বিক্রয় মূল্যের হিসাব বিবরণী এ আদেশ জারির তারিখের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হলো।

কপিরাইট অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আবদুল হাকিম অভিযোগ করার পরে অভিযোগকারী ও প্রতিপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে ওই বছরের ১১ ও ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ৪ নভেম্বরশুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীতে উভয়পক্ষ স্বপক্ষে নিজ নিজ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয়ে প্রতিপক্ষ লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন। প্রতিপক্ষের উক্ত লিখিত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেবাদী পুনরায় নিজের স্বপক্ষে লিখিত যুক্তিতর্ক দাখিল করেন। পরবর্তীতে অভিযোগকারীর দাখিলকৃত যুক্তির বিষয়ে প্রতিপক্ষ পুনরায় লিখিত যুক্তিতর্ক পেশ করেন।

বিষয়টি বেশ জটিল এবং দেশের প্রকাশনা শিল্পের ক্ষেত্রে লেখক ও প্রকাশকের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্ব বিবেচনা করে, এর সন্তোষজনক ও সুষ্ঠু সমাধানের উদ্দেশ্যে উক্ত অভিযোগের বিষয়ে এদেশের বিখ্যাত ও প্রথিতযশা কয়েকজন লেখক ও প্রকাশক এবংসেবা প্রকাশনীর সাবেক ব্যবস্থাপকের লিখিত মতামত চাওয়া হয়। যাদের মধ্যে ছিলেন লেখক বুলবুল চৌধুরী ও শওকত হোসেন, প্রখ্যাত শিল্পী হাসেম খান এবং সেবা প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক ইসরাইল হোসেন খান। তাদের লিখিত মতামতের উপরে ভিত্তি করেই রবিবার রায় দেয়া হয়েছে।

জেএসএস-০৩/এনপি-১০