সংকট নিরসনে শায়েস্তাগঞ্জে সবজি চাষ কর্মসূচি শুরু

সৈয়দ হাবিবুর রহমান ডিউক, শায়েস্তাগঞ্জ


জুন ২৫, ২০২০
০৬:৩২ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ২৫, ২০২০
০৬:৩২ অপরাহ্ন



সংকট নিরসনে শায়েস্তাগঞ্জে সবজি চাষ কর্মসূচি শুরু

সারাদেশে করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ধারণ করায় প্রভাব পড়েছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে। অনেকেই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হোম কোয়ারেন্টিনে অলস সময় কাটাচ্ছেন। টানা লকডাউনে অনেকেই বাড়ির আঙিনায়, বাসার ছাদে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেছেন।

দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে অভাব পড়তে পারে শাক-সবজি ও কৃষি খাদ্যের। করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা যেন খাদ্য সংকটে না পড়েন, সেজন্য বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় মোট ৯৬ জন কৃষক এই তালিকার আওতাধীন আছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ কর্মসূচির আওতায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কমিটি করে এ তালিকা করা হয়েছে। এতে কৃষকদের নাম, বাবার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর অথবা মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর সংযুক্ত করা হয়েছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, প্রত্যেক কৃষক স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও চারা পাবেন। এছাড়াও জনপ্রতি জৈব ও অজৈব সার বাবদ ৪৩৫ টাকা, শাক-সবজি রক্ষায় বেড়া তৈরির খরচ বাবদ এক হাজার টাকা ও পরিচর্যা বাবদ ৫০০ টাকাসহ নগদ মোট ১ হাজার ৯শ ৩৫ টাকা পাবেন। এ নগদ অর্থ ব্যাংক হিসাব অথবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ ও নগদ) মাধ্যমে হাতে পাবেন কৃষকরা। এই টাকা মাঠ পর্যায়ের কৃষকের হাতে পৌঁছেছে কি-না কিংবা তালিকায় কোনো অনিয়ম হয়েছে কি-না তা সরাসরি কৃষি কর্মকর্তারা তদারকি করে নিশ্চিত হবেন।

মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের এ উদ্যোগের ফলে করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময় প্রান্তিক কৃষকদের খাদ্য সংকটে পড়তে হবে না। একদিকে যেমন কৃষকরা পুষ্টিকর শাক-সবজি উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন, অন্যদিকে এ মহামারিতে সামান্য শাক-সবজির জন্য তাদের হাট-বাজারে যেতে হবে না।

এ বিষয়ে সুরাবই গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান বলেন, করোনা সংকটে এটা সরকারের চমৎকার একটি উদ্যোগ। সরকারি সহায়তা পেলে আমাদের শাক-সবজি কিনে খেতে হবে না।

শায়েস্তাগঞ্জের কৃষক সুজাত মিয়া বলেন, আমরা বাসার ছাদে বেশ কিছুদিন ধরে শাক-সবজি চাষ করে আসছি। এতে করে আমাদের শাক-সবজির চাহিদা অনেকটা মিটে যায়। আর সরকারিভাবে বীজ ও সার পেলে আমরা আরও ভালো করে শাকসবজি চাষ করতে পারব।

এ বিষয়ে নুরপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবুবকর ছিদ্দিকী বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা নুরপুর ইউনিয়নের ৩২ জনের তালিকা জমা দিয়ে এসেছি। 

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত ধর জানান, সর্বনিম্ন এক শতক জমিতে কালিকাপুর মডেল অনুসরণ করে বসতবাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ কর্মসূচির আওতায় প্রতি ইউনিয়ন থেকে ৩২ জন কৃষক স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও চারা পাবেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) থেকে শায়েস্তাগঞ্জে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও ব্যাংক কিংবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও তারা টাকা পাবেন, যা সার ক্রয়, জমি পরিচর্যা ও সবজি বাগান সুরক্ষা বাবদ খরচ করবেন। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকরা করোনাকালে শাক-সবজির সংকটে পড়বেন না বলে আশা করা যায়।

 

এসডি/আরআর-০৪