কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে অচল শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা

শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
০৭:২৫ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
০৭:২৭ অপরাহ্ন



কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে অচল শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় বকেয়া বেতন দেওয়ার প্রসঙ্গে এবার মুখোমুখি অবস্থানে চলে এসেছেন মেয়র ছালেক মিয়া ও পৌর কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন যাবত বেতন-ভাতাদি না দেওয়ায় ও বার বার মেয়রের শরনাপন্ন হয়েও কোনো সুরাহা না পাওয়ায় এবং মেয়র কর্তৃক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন পৌরসভার কর্মচারীরা।

গতকাল মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পৌরসভা কার্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে এ কর্মবিরতি পালন করা হয়। এ সময় তারা তাদের ন্যায্য অধিকার না পেলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি প্রদান করেন। আজ বুধবারও (২৩ সেপ্টেম্বর) কর্মবিরতি পালন করেছেন পৌরসভার কর্মচারীরা।

শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক সুশীল বশার জানান, পৌরসভার প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন কর্মচারীকে ৭ থেকে ৮ মাস যাবত বেতনসহ কোনো ধরণের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন না মেয়র ছালেক মিয়া। বার বার মেয়রের কাছে গিয়ে বকেয়া বেতনের জন্য বলা হলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টো কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করাসহ অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। তবে মেয়রের পছন্দের কর্মচারীরা ঠিকই বেতন-ভাতাদি পাচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন যাবত বকেয়া বেতন না পেয়ে কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ও ভারপ্রাপ্ত সচিব সিরাজুল ইসলামের কাছে গেলে তিনিও কোনো সুরাহা করতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়েই তাদেরকে আন্দোলনে নামতে হয়েছে। পালন করতে হয়েছে কর্মবিরতি।

তার সঙ্গে আন্দোলনে আছেন, পৌরসভার কর আদায়কারী দেবাশীষ দেব, কর নির্ধারক সুজিত কুমার দত্ত, কার্য সহকারী আজিজুল হক, কার্য সহাকারী রিপন মিয়া, টিকাদানকারী কামাল উদ্দিন, গাড়িচালক সেবুল মিয়া, ইউনুছ মিয়া ও জাহির মিয়াসহ আরও ১৫ থেকে ২০ জন কর্মচারী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র ছালেক মিয়া বলেন, 'পৌরসভার নিজস্ব আয় থেকে কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়। এই মুহূর্তে শুধু আমার পৌরসভা নয়, সারা বাংলাদেশে প্রায় ২ শতাধিক পৌরসভায় অনেক কর্মচারীর বেতন বকেয়া রয়েছে।'

বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা বিভিন্ন সময় উত্তেজিত হয়ে অফিস ভাংচুর করেছেন বলে অভিযোগ এনে মেয়র আরও বলেন, যারা আন্দোলন করছেন, তারা আমার পূবের্র মেয়রের সময় চাকরি নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই কর্মস্থলে ঠিকমতো উপস্থিত হন না, আবার কেউ কেউ জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নিয়েছেন। তাই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী লোকদের ইশারায় তারা এ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।'

এদিকে, পৌরসভায় মেয়র ছালেক মিয়া ও কর্মচারীদের মুখোমুখি অবস্থানে থাকার ফলে ব্যাঘাত ঘটছে পৌরসভার কাজকর্মে। অনেকেই পৌর কার্যালয়ে গিয়ে সেবা না পেয়ে ফিরছেন শূন্য হাতে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে পৌর নাগরিকরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তাই এ বিষয়ে দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা।

 

এসডি/আরআর-০৩