অপহরণের পর কলেজ ছাত্রকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
০৬:২৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
০৬:২৯ পূর্বাহ্ন



অপহরণের পর কলেজ ছাত্রকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

সিলেটে এক কলেজ ছাত্রকে অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেছেন এমসি কলেজ বিএসএস পাস কোর্সের শিক্ষার্থী নজির আহমদ মোজাহিদ। নজির আহমদ মোজাহিদ সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের বড়ফৌদ গ্রামের বাসিন্দা। 

লিখিত বক্তব্যে মোজাহিদ বলেন, ‘গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ১০টার দিকে বড়ফৌদ পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের মক্তবঘর এলাকায় সালিশের কথা বলে এলাকার রাজা মিয়াকে দিয়ে আমাকে ডেকে নেওয়া হয়। পরিকল্পিত সালিশে উপস্থিত ছিলেন এলাকার রফিকুল ইসলাম মড়ল (৪০), আফতাব উদ্দিন (৪২), আব্দুর রহিম বাবু (৫০), বশির (৫৫), সুরুজ আলী (৫৭), সুবহান (৬০), সুনান (৫০), ইছমত (৫৫), খালিক (৫৫), মুহিবুর রহমান (৪০), আনিছুর রহমান আয়নিছ (৪৫), আয়নুল হক (৫৫), নুর মিয়া (৬০), সুরুজ আলী (৫৫), রাজা মিয়া (৫৫), সিরাই (৪৫)। সবাই সালিশের নামে অস্ত্রহাতে বসেছিল। সেখানে যাওয়ার পরই আমাকে ঘেরাও করে অপহরণ করা হয়। সবাই মিলে আমাকে মারধর করে গ্রাম পার করে হাওর এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর হত্যার জন্য মুহিব, আয়নিছ, খালিক নামে ৩ জনের হাতে তুলে দেয়। তারা হাওরের মাঝখান দিয়ে কমপক্ষে ২ কিলোমিটার জায়গা আমাকে হাটিয়ে রাত ১১টার দিকে স্থানীয় চেঙেরখালের শাখা ভাদেশ্বর নদীর তীরে নিয়ে যায়। তাদের সঙ্গে ছুরি ও বস্তা ছিল।’

সেখান থেকে বেঁচে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা যখন হত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছিল আমি লাফ দিয়ে নদীতে পড়ে যাই। আমাকে ধরতে তারাও নদীতে পড়ে কিন্তু সাঁতার কেটে আমার সঙ্গে পেরে ওঠেনি। আমি নদী পার হয়ে ইউনিয়নের দখড়ি গ্রামে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাইদুর রহমানের বাড়িতে আশ্রয় নেই।’ পুলিশকে ঘটনাটি জানালেও শিবেরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ রাজা মিয়াকে আটক করেও পরে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন মোজাহিদ। 

তিনি বলেন, ‘১৭ সেপ্টেম্বর শিবেরবাজার ফাঁড়িতে বিষয়টি ফোন দিয়ে জানালে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় তখন ম্যাজিস্ট্রেট জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করলেও এক পুলিশ সদস্য এজাহার লিখে দেন। যেখানে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুর উল্লেখ নেই।’ এজাহারে মূল ঘটনাকে তিনি ভিন্নখাতে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মোজাহিদ।

তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত সালিশের নামে আমাকে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টা করা হয়। মূলত, ইউনিয়নে আতাউরের সঙ্গে লেনদেনের বিচার থেকে শুরু করে সালিশে থাকা লোকজনের সঙ্গে আতাউর, রাজা মিয়াও অপহরণ ও হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জড়িত ছিল।’ এখনও তারা হত্যার জন্য খুঁজছে বলে অভিযোগ করেন মোজাহিদ। তিনি বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে আমি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এলাকায় যেতে পারছি না,  যদি ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়, সেই ভীতি থেকে ওরা আমাকে হত্যা চেষ্টায় হণ্যে হয়ে ঘুরছে। এমন অবস্থায় আমি প্রশাসনের মাধ্যমে আইনি সহায়তা কমনা করি।’

বিএ-০৪