নবীগঞ্জে দুই ভুয়া চিকিৎসককে কারাদণ্ড, জরিমানা

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি


নভেম্বর ০৮, ২০২০
১২:৩৮ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০৮, ২০২০
১২:৩৮ অপরাহ্ন



নবীগঞ্জে দুই ভুয়া চিকিৎসককে কারাদণ্ড, জরিমানা

কাজল দেবনাথ ও অলক চন্দ্র দত্ত

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে দুই ভুয়া চিকিৎসককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ রবিবার (৮ নভেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কাজল দেবনাথ ও অলক চন্দ্র দত্তকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জেল ও জরিমানা প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন।

কাজল দেবনাথকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। আর অলক চন্দ্র দত্তকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ডাক্তার না হয়েও নামের আগে ডাক্তার লেখে প্রতারণা করে আসছিল একটি প্রতারক চক্র। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নির্দেশে স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ নিয়ে অভিযান শুরু করে করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন। অভিযানে নবীগঞ্জ পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কে দেখা যায় একটি সাইনবোর্ড লেখা রয়েছে 'দেবনাথ মেডিকেল সার্ভিস'। আরও লেখা সেখানে শিশুসহ বিভিন্ন রোগী দেখেন ডা. কাজল দেবনাথ। ভেতরে গিয়ে তার কাগজপত্র যাচাই-বাছাইকালে কোনো সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি তিনি। তবে তার কাছে ভারতীয় বিভিন্ন কাগজপত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া বেবি ফুডসহ ওষুধ বিক্রির কোনো লাইসেন্স না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তার মালিকানাধীন ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি করছিলেন তিনি। এসব অপরাধে কাজল দেবনাথকে তিনমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয় এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুইমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে তার দেবনাথ মেডিকেল সার্ভিস নামক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়।

অপরদিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রসূলগঞ্জ নতুন বাজারে দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী নামের ফার্মেসিতে চিকিৎসার নামে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন অলক চন্দ্র দত্ত। তিনিও নামের আগে ডা. লেখে বড় করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। তার কাগজপত্র যাচাই-বাছাইকালে তিনি স্বীকার করেন যে তিনি দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তার চেম্বারে অপারেশনের বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া গেছে। একই সামগ্রী দিয়ে একাধিক রোগীর অপারেশন করেন তিনি। তার কাছে কোনো সার্টিফিকেট না থাকায় তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয় এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুইমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তাদেরকে নবীগঞ্জ থানার পুলিশের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

দণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে নবীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন জানান, এ অভিযান শুধু শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সকল গ্রামে-গঞ্জে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সব ভুয়া ডাক্তারদের আইনের আওতায় আনা হবে।

অভিযানে সহযোগিতা করেন নবীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. চম্পক কিশোর সাহা সুমন ও নবীগঞ্জ থানার এসআই সম্রাট আহমেদ।

 

এএম/আরআর-০৯