শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি
নভেম্বর ১০, ২০২০
১০:২৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১০, ২০২০
১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় দিন দিন ইন্টারনেটে ফাইটিং গেমস ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমসে ঝুঁকছে তরুণরা। দীর্ঘদিন ধরে করোনায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অলস এ সময়ে গেমসে আসক্তি বেড়েছে তরুণদের।
উপজেলার উঠতি বয়সের শিক্ষার্থীরা দিন দিন ফ্রি ফায়ার ও পাবজি নামক গেমের নেশায় জড়িয়ে যাচ্ছে। যে সময় তাদের ব্যস্ত থাকার কথা নিয়মিত পড়ালেখা কিংবা খেলাধুলায়, তখন প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় খুব সহজেই তারা জড়াচ্ছে বিভিন্ন গেমের রঙিন দুনিয়ায়।
৮ বছর থেকে ২১ বছরের শিশু থেকে তরুণরা প্রতিনিয়ত অ্যান্ড্রয়েড ফোন দিয়ে এসব গেমে আসক্ত হচ্ছে। এসব বিদেশি গেম থেকে শিক্ষার্থী বা তরুণ প্রজন্মকে ফিরিয়ে আনতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
ফ্রি ফায়ার গেমের অনুরাগীরা জানান, প্রথমে তাদের কাছে ফ্রি ফায়ার গেমস ভালো লাগত না। কিছুদিন বন্ধুদের দেখাদেখি খেলতে গিয়ে এখন তারা আসক্ত হয়ে পড়েছেন। এখন গেম না খেলে তাদের সময় কাটে না।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল সুজাত জানায়, তিনি পূর্বে গেমস সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। এখন নিয়মিত ফ্রি ফায়ার গেমস খেলেন তিনি। মাঝে-মধ্যে গেমস খেলতে না পারলে মুঠোফোন ভেঙে ফেলার ইচ্ছা হয় তার। ফ্রি ফায়ার গেমস যে একবার খেলবে সে আর ছাড়তে পারবে না বলে দাবি করেন তিনি। তিনি সারারাত গেমস খেলেন আর দিনে ঘুমাতে যান বলেও জানান।
ফ্রি ফায়ার ও পাবজি নামক গেমসকে মাদকদ্রব্যের নেশার চেয়ে ভয়ঙ্কর বলে উল্লেখ করেছেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে নূরপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম সাজু বলেন, 'আমাদের সময় আমরা অবসর সময়টি বিভিন্ন খেলাধুলার মধ্য দিয়ে পার করতাম। কিন্তু এখনকার যুগে সন্তানদের মাঝে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। জেলার গ্রাম-গঞ্জে মোবাইল, ইন্টারনেট, গেম মহামারি আকার ধারণ করেছে।'
তিনি বলেন, 'শিক্ষার্থীরা অনেকে পড়ার টেবিল ছেড়ে খেলছে মোবাইল গেমস, কখনও ইন্টারনেটের খারাপ সাইটে বিভিন্ন ছবি দেখছে। এতে একদিকে তাদের ভবিষ্যৎ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। তাই কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের মা-বাবাসহ সমাজের সবারই খেয়াল রাখতে হবে, যেন তারা মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার না করে।' প্রতিটি সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখা মা-বাবার দায়িত্ব বা কর্তব্য বলে মনে করেন তিনি। এ সমস্যা থেকে সন্তানদের বাঁচাতে অভিভাবকদের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মহল, শিক্ষক-শিক্ষিকা, জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর এটুআই প্রকল্প থেকে কিশোর বাতায়ন করা হয়েছে। সেখানে যদি তারা ঢুকে তাহলে ভালো হয়। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিনোদনমূলক কিছু বিষয় সংযুক্ত করা আছে। তারা চাইলে নিজেদের ফ্রি টাইম এই সাইটে ব্যয় করতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই করোনাকালে স্কুল-কলেজ যেহেতু বন্ধ, ছেলে-মেয়েরা বাসায় থাকে, তাই অভিভাবকদের উচিত তাদের প্রতি নজরদারি বাড়ানো। অনলাইন ক্লাস থাকলে নির্দিষ্ট সময় তাদের হাতে স্মার্ট ফোন দিতে হবে। রাত জেগে গেমস যাতে না খেলতে না পারে, অভিভাবকদের সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।'
এসডি/বিএন-০৫/আরআর-০৩