শায়েস্তাগঞ্জে পাকা ধান সাবাড় করছে বন্য শুকর

শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি


নভেম্বর ১৩, ২০২০
০৫:৩৩ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ১৩, ২০২০
০৬:২৬ অপরাহ্ন



শায়েস্তাগঞ্জে পাকা ধান সাবাড় করছে বন্য শুকর

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুতাং অঞ্চলে বন্য শুকরের উৎপাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত ৪-৫ মাস ধরে একটানা বিভিন্ন উপায়ে মানুষের ক্ষতি করে যাচ্ছে শুকররা। একের পর এক জমির পাকা ধান খেয়ে সাবাড় করছে তারা। এদের উৎপাত থেকে বাঁচার জন্য কৃষকরা রাতের বেলা প্রতিটি জমিতে আলোর মশাল জ্বালিয়ে রাখেন, যেন শুকররা জমিতে এসে হানা না দেয়। কারণ কোনো কোনো শুকর আগুন দেখলে ভয় পায়।

জানা গেছে, রাত হলেই পাহাড় থেকে খাদ্যের সন্ধানে দল বেঁধে গ্রামে, কখনোবা ধান ক্ষেতে এসে হানা দেয় শুকররা। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুরাবই, পুরাসুন্দা ও লাদিয়া গ্রামে তাদের উৎপাত বেশি। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসী। 

এদিকে কৃষকদের শেষ সম্বল পাকা ধান হারিয়ে অনেকেই হতাশ ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এর আগে শুকররা নতুন বাঁশের চারা, কৃষিজমির নানারকম ফসলাদির সাবাড় করছিল। বন্য শুকরের ভয়ে শিশুরা ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারে না। অনেক গ্রামে ঢুকে খাদ্য না পেলে রাতের আঁধারে মানুষের ঘরে ঢোকার চেষ্টাও করে থাকে।

সুরাবই গ্রামের আব্দুর রহিম জজুম হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, 'বন্য শুকর খুবই হিংস্র প্রাণী। এদের থেকে বাঁচার পথ দেখছি না।'

সুরাবই গ্রামের মো. তওহিদ মিয়া বলেন, 'গ্রামের পাশেই পাহাড় থাকায় এদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এদের জন্য আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি আমরা। আমার দুই একর পাকা ধান নষ্ট করেছে। এমনকি ধানের খড়ও রেখে যায়নি শুকররা।'

একই গ্রামের হেলিম  মিয়া বলেন, 'আমি বর্গা জমিতে ধান চাষ করি। আমার দেড় একর পাকা ধান খেয়ে ফেলেছে। আমি এখন কী খেয়ে বেঁচে থাকব?'

সুতাং অঞ্চলে কমপক্ষে ৫০ একর পাকা ধানের ক্ষতি করেছে শুকররা। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার মানুষকে না খেয়ে থাকতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৮-১০ বছর আগে সুরাবই গ্রামে একবার শুকর হানা দিয়েছিল। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাইফেল দিয়ে গুলি করে একটি শুকর হত্যা করা হয়েছিল। স্থানীয় কেউ কেউ মনে করছেন, পাহাড়ে শুকরদের খাদ্যের ঘাটতি থাকায় তারা খাবারের সন্ধানে এসে গ্রামে হানা দেয়। আবার অনেকে মনে করছেন এটা তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষকে এর ফল ভোগ করতে হবে।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ বন বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএফও মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, হয়তো বনে খাদ্য কমে গেছে, তাই তারা হানা দেয়। এদেরকে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ডর-ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিতে হবে। সরকার থেকে আবার এদেরকে রক্ষা করার জন্য নির্দেশ রয়েছে। তবুও সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য তিনি এ বিষয়ে হবিগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন বলে জানান।

 

এসডি/বিএন-০১/আরআর-০১