খাদিমনগরে বসতভিটা রক্ষায় সহযোগিতা চান মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ওজিফা

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ২৩, ২০২০
০২:৫১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৩, ২০২০
০২:৫১ পূর্বাহ্ন



খাদিমনগরে বসতভিটা রক্ষায় সহযোগিতা চান মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ওজিফা

প্রভাবশালী মহলের উচ্ছেদ চক্রান্ত ও নানা হুমকি-ধমকিতে নিজের কেনা ভিটেমাটিতে বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন সদর উপজেলার খাদিমনগরের কাকুয়ারপার গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের স্ত্রী ওজিফা বেগম। রবিবার (২২ নভেম্বর) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে ওজিফা বেগম বলেন, আমার বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। দেশের স্বাধীনতার জন্য আমার বাবা যুদ্ধ করেছেন। অথচ স্বাধীন দেশে আজ আমি স্বামী-সন্তান নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছি। একটি সন্ত্রাসী মহলের চক্রান্তের শিকার আমি এবং আমার পরিবার। তাদের নানা অপকর্ম, অপপ্রচার ও হুমকি ধমকির কারণে আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় জীবন যাপন করছি।

তিনি বলেন, আমার স্বামীর কেনাসূত্রে বর্তমান বাড়িটির মালিক আমরা। এই বাড়ির জায়গা দখল করতে চায় কাকুয়ারপার এলাকার হাশেম মিয়ার ছেলে আফরোজ মিয়া। দীর্ঘদিন থেকে নানা বাহানায় আমাদের উচ্ছেদ করে এই ভিটে দখল করার চেষ্টা করছেন আফরোজ। আমাদের কেনা ভূমি সংলগ্ন সরকারি খাস জমি দখল করে সেখানে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন আফরোজ মিয়া।

ওজিফা আরও বলেন, রেস্টুরেন্টটি আমাদের বসতভিটা সংলগ্ন হওয়ায় বাড়ির মেয়েরা বাইরে বের হতে পারছে না। এ বিষয় নিয়ে আফরোজ মিয়ার সঙ্গে আলাপ করতে গেলে তিনি উল্টো আমাদের গালিগালাজ করেন ও মারধরের হুমকি দেন। অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে তাকে ৪ লাখ টাকা প্রদান করতে হবে বলে জানান। আমাদের পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি তাই আফরোজ মিয়া এবং তার দুই ছেলে আহসান হাবিব ও আইয়ুব হাসান প্রতিনিয়ত আমাদের গালিগালাজ, হুমকিসহ নানা রকম হয়রানি করে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সালিশানদের সহযোগিতা চেয়েও আমরা প্রতিকার পাইনি।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে আফরোজ মিয়া তাদের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন এবং তার দুই সন্তান বাড়িতে ঢুকে তাকে মারধর করে। আফরোজ মিয়ার অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে বিমানবন্দর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পায়। 

আফরোজ মিয়ার দখল করা সরকারি ভূমিতে নির্মিত অবৈধ স্থাপনার বিষয় উল্লেখ করে গত ২৩ আগস্ট সিলেটের অতিরিক্ত জেলা হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ওজিফা বেগম। তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদনে জমিটি সরকারি খাস জমি এবং সেটি ওজিফার বাড়ির সামনেই বলেই উল্লেখ করেন। এতে ক্ষেপে যান আফরোজ ও কাকুয়ারপার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা। আফরোজ মিয়ার নেপথ্যে কাজ করছেন আবু সাইদ আব্দুল্লাহর ছেলে কাকুয়ারপারের নাজমুল আলম ও জহির আলীর ছেলে কাকুয়ার পার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির শাহেদ। তাদের উচ্ছেদ করতে পারলে মোটা অংকে বাড়িটি বিক্রি করার জন্যই সবাই একত্রিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ওজিফা বেগম।

আফরোজ অচেনা লোকজনকে দিয়ে মোবাইলে (০১৭৯৪২৫২৬০৫) স্বামী-সন্তানদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন এমন অভিযোগ এনে ওজিফা বলেন, আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিষয়টি উল্লেখ করে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।

সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে অনলাইন মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বামীর সংসারে সমস্যা হওয়ায় বর্তমানে আমাদের একমাত্র মেয়ে আমাদের সঙ্গেই থাকছে। তাকে অপবাদ দিয়ে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে তা সত্য নয়। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, বিমানবন্দর থানার গত ওপেন হাউসডেতেও খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নাজিম উদ্দিন ইমরান আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য রেখেছেন। ওজিফা বেগম পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন সকল মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বিএ-১৮