দোয়ারাবাজারে আসামিপক্ষের বাড়িতে লুটপাটের অভিযোগ

দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ০৩, ২০২০
০৯:৫১ অপরাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০৩, ২০২০
১১:৪৬ অপরাহ্ন



দোয়ারাবাজারে আসামিপক্ষের বাড়িতে লুটপাটের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের নিভৃত পল্লীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘটিত এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় আসামিপক্ষ ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িঘর লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। 

সম্প্রতি বাড়িঘর লুট করার অভিযোগে উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের দ্বীনেরটুক গ্রামের মৃত আজর আলীর পুত্র রবিউল হক সুনামগঞ্জ আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের দ্বীনেরটুক গ্রামে মাদরাসা সংক্রান্ত বিষয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন নিহত হন। ওই ঘটনার পর বিবাদীপক্ষের বাড়িঘরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়লে বাদীপক্ষের লোকজন হত্যা মামলার দুই আসামিসহ তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এর কিছুদিন পর লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে ৪ জন একই এলাকার এক নববধূকে জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে রাতভর ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর নিজেরা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় বর্তমানে তারা জেলহাজতে রয়েছেন (দোয়ারাবাজার থানার মামলা নং-০৯/১৬/০৬/২০২০)। 

অভিযোগের এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা প্রাণঘাতি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে নারীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্থানীয় খালেদা বেগমের ৪টি গরু, ফ্রিজ, বাসন-কোসন, আসবাবপত্র, আলমিরা, স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া তারা বসতঘর ভাংচুর করে চালের টিন খুলে নিয়ে যায়। হত্যা মামলার আসামিদের ৩টি ঘর ভাঙচুর করে লুটপাট চালানো হয়। 

অভিযোগকারী রবিউল হক বলেন, ‘দুইপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় মামলা দেওয়ার পর কয়েকজন জেলহাজতে এবং বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। এর জেরে বিবাদীপক্ষের সন্ত্রাসী ও দাঙ্গাবাজ লোকেরা বাড়ি থেকে নারী ও শিশুদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের তান্ডব চালায়।  হত্যা মামলার কোনো আসামি না হলেও আমার ৫টি গরুসহ বসতঘরের সম্পূর্ণ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। একইভাবে মশাহিদ আলীর ঘর লুটপাট করে সকল আসবাবপত্রসহ একটি অটোরিকশা ও ৭টি গরু নিয়ে যায়। ইবরাহীম আলীর ঘরে হামলা চালিয়ে ৫টি গরুসহ বাড়ির সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়। আমরা এখন পুরুষশূন্য বাড়িঘরে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। যেকোনো সময় অভিযোগে উল্লেখিত ব্যক্তি ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলতে পারে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ 

তবে আসামিপক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়ে খুনের মামলার বাদী জুয়েল আহমদ বলেন, ‘আমাদের মামলার আসামিপক্ষের বাড়িঘর কে বা কারা ভাংচুর ও লুটপাট করেছে জানা নেই। তবে গ্রামের অসংখ্য নিরীহ মানুষকে অহেতুক মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছেন আমাদের বিপক্ষের লোকজন। এছাড়া হত্যা মামলার আসামিদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও এখনও মূল আসামিরা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমি মামলার অন্যান্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও খুনের সঠিক বিচার চাই।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজির আলম বলেন, ‘যথাযথ তদন্তসাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালাতে মামলার প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।’

 

এইচএইচ/বিএন-০৩/আরআর-০১