শাল্লায় জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের চেষ্টা

শাল্লা প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ১৮, ২০২০
০৭:৩৩ অপরাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ১৮, ২০২০
০৭:৩৩ অপরাহ্ন



শাল্লায় জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের চেষ্টা
অভিযুক্ত তিন দলিল লেখক, ঘটনা আড়ালের চেষ্টা

হাওর এলাকা সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বেশি দুর্গম জনপদের নাম শাল্লা। এখানকার মানুষজন সহজ-সরল প্রকৃতির। সহজেই পা দিয়ে দেন প্রতারণার ফাঁদে! যার সর্বশেষ জ্বলন্ত উদাহরণ গত ১ ডিসেম্বরে রেকর্ড জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রির ঘটনা। এমন একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পুরো শাল্লা এখন আলোচনায় সরগরম।

জানা গেছে, গত ১ ডিসেম্বর শাল্লার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেকর্ড জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রিকালে হাতেনাতে ধরা পড়েন শাল্লার ৩ জন দলিল লেখক। এ সময় দায়িত্বরত সাব-রেজিস্ট্রার এই তিনজনকে দলিল না লিখতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ঘটনাকে আড়াল করতে নেওয়া হয় লিখিত মুচলেকা। আর এ ঘটনাটি এখন ‘টক অব দ্যা শাল্লা’।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত এই তিনজন হলেন শাল্লা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি গোলাম নবী, সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম ও দলিল লেখক আব্দুল গফফার। এই তিনজনের পরিকল্পনায় উপজেলার ৩ নম্বর বাহাড়া ইউনিয়নের মেদা মৌজার আর.এস. ৪৯ খতিয়ানের ২৭৪, ৭৬৪, ৭৬৫ ও ৭৯৩ নম্বর দাগসমূহের মোট ৮৪ শতাংশ ভূমির প্রকৃত মালিক মেদা গ্রামের মৃত জাহের আলীর ছেলে ইলিয়াছ উদ্দিন, ইউসূফ আলী ও ইউনূছ আলী। তবে ইলিয়াছ আলী ও ইউসূফ আলী নাম কর্তন করে শুধুমাত্র ইউনূছ আলীর একক নামের খতিয়ান পর্চাটি দেখানো হয়। পরে দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য সাব-রেজিস্ট্রার বরাবর এই তিনজনের দাখিলকৃত দলিলের সঙ্গে রেকর্ডের জাল পর্চা যুক্ত করার বিষয়টি জেনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ওই তিনজন দলিল লেখককে সাময়িকভাবে দলিল না লিখতে মৌখিক নির্দেশ দেন। তবে এ বিষয়টি পুরোপুরি আইন মেনে হয়নি বলে ক্ষোভ রয়েছে সংশ্লিষ্ট অন্যদের মধ্যে। 

এলাকার সচেতন লোকজন বলছেন, খোদ দলিল লেখক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকই যদি এরকম প্রতারণার আশ্রয় নেন, তাহলে সাধরাণ মানুষজন আর কাকে বিশ্বাস করবে? দীর্ঘদিন থেকেই শাল্লা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এরকম অনিয়ম-জালিয়াতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের।

এ বিষয়ে শাল্লায় কর্মরত (খন্ডকালীন) সাব-রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল বাতেনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, 'দলিল রেজিস্ট্রেশনকালে রেকর্ড জালিয়াতির বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয় এবং দলিল রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে ওই তিনজন দলিল লেখককে দলিল না লিখতে সাময়িকভাবে নিষেধ করে তাদের কাছ থেকে লিখিত নিয়েছি। তবে শেষ কথা হলো জাল পর্চায় লিখিত দলিল রেজিস্ট্রেশন হয়নি।'

 

এএইচ/আরআর-০৮