কুলাউড়া প্রতিনিধি
জানুয়ারি ২৪, ২০২১
০১:১৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ২৪, ২০২১
০১:১৯ পূর্বাহ্ন
বিপুল বিশ্বাস
তাবিজের স্পর্শে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া আতিকুর রহমান সোহেল অজ্ঞান হয়ে যান। তাৎক্ষণিক ওই শিক্ষককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হট্টগোল বাঁধে। সেই সঙ্গে ভণ্ডুল হয়ে যায় নিয়োগ পরীক্ষা। ঘটনাটি ঘটেছে আজ শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার শ্রীপুর উচ্চবিদ্যালয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল আজ শনিবার। প্রধান শিক্ষক পদে ৫ জন প্রার্থী এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ৪ জন প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন। নিয়োগ পরীক্ষা নিতে উপজেলা, জেলা শিক্ষা অফিসের ও ডিজি অফিসের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বমুহূর্তে। লিখিত পরীক্ষার জন্য হলরুমে প্রবেশের মুহূর্তে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী আতিকুর রহমান সোহেল বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী বিপুল বিশ্বাসকে (৪৮) কুশল জিজ্ঞেস করেন। এ সময় বিপুল বিশ্বাস একটি তাবিজ ওই শিক্ষকের গায়ে স্পর্শ করালে অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যান তিনি।
প্রধান শিক্ষক পদে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা সোহেলকে উদ্ধার করে প্রথমে ব্রাহ্মণবাজারের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এবং পরবর্তীতে সিলেট নগরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ওই হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন বলে জানিয়েছেন তার ভাই ফয়জুর রহমান ছুরুক।
এদিকে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা নৈশপ্রহরী বিপুল বিশ্বাসকে গণধোলাই দিয়ে বিদ্যালয়ের বাথরুমে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষন রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক বিপুল বিশ্বাসকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
আটক বিপুল বিশ্বাস দাবি করেন, 'সোহেল স্যার আমার খুব ঘনিষ্ঠ মানুষ। তিনি আমার কাছে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আশীর্বাদ চেয়েছিলেন। আমি তাকে ধর্ম ও প্রভূর দোহাই দিয়ে তাবিজ দিয়ে আশীর্বাদ করতে তার শরীরে স্পর্শ করি। তখন দেখতে পাই তিনি অসুস্থতা বোধ করছেন। আমি কোনো খারাপ উদ্দেশে কিছু করিনি।'
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম খান বাচ্চু বলেন, 'আমার সামনে এ ঘটনাটি ঘটেছে। প্রধান শিক্ষক পদে পরীক্ষা দিতে আসা আতিকুর রহমান সোহেল তার মাথা ঘুরছে বলেই পড়ে যান। তখন তাকে উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে পাঠাই এবং নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করি।'
কুলাউড়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার বলেন, 'পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ায় আপাতত শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।'
জেএইচ/আরআর-০৫