জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
জানুয়ারি ৩০, ২০২১
০২:১৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ৩০, ২০২১
০২:১৯ পূর্বাহ্ন
প্রেম, অতঃপর অন্তঃসত্ত্বা, তারপর গ্রামছাড়া। আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে। আজ শুক্রবার পর্যন্ত অন্তঃসত্ত্বা ওই তরুণী ও তার পরিবারের লোকজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, কুৎসা আর কলঙ্কের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে দরিদ্র ওই পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লালসার শিকার ওই তরুণীর বসতবাড়িটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। সেখানে লোকজন নেই। কেউই জানেন না তারা কোথায় আছেন, কেমন আছেন।
তবে শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম জানান, গত ২৬ জানুয়ারি মেয়েটি আমাকে মোবাইলে কল দিয়ে বলে, 'মেম্বার সাব, আমার পাশের ঘরের আখলুল মিয়ার ছেলে জামিল মিয়া প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমাকে নষ্ট করেছে। আমি এখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। হাসপাতালে এসেছিলাম সন্তান নষ্ট করতে। কিন্তু ডাক্তাররা রাজি হননি।' এরপর মেয়েটি ফোন কেটে দেয়।
ওই ইউপি সদস্য বলেন, আমি শুনেছি মেয়েটির পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে চলে গেছে। কোথায় গেছে আমি জানি না। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেছিলেন কি না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি না বলেন।
গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামের আখলুছ মিয়ার ছেলে টমটমচালক জামিল মিয়া প্রতিবেশী দরিদ্র ওই মেয়ের সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রতি দিয়ে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিয়ের জন্য ছেলেটিকে বলা হলে সে তরুণীকে পেটের বাচ্চা নষ্ট করার কথা বলে। লোকলজ্জা আর হুমকি-ধমকিতে তরুণীর অসহায় পরিবার অবশেষে সন্তান নষ্ট করতে গত ২৬ জানুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্স সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের লোকজন মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। এর পরদিন অর্থাৎ গত ২৭ জানুয়ারি ভোরবেলা থেকে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীসহ তাদের পরিবারের লোকজন গ্রাম ছেড়ে চলে যান।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, মেয়েটির বাবা প্রতিবন্ধী। ওই দরিদ্র ব্যক্তির স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে সংসার। প্রতিবন্ধী ভাতা আর মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় সংসার চলত তাদের। মাথায় কলঙ্কের বোঝা নিয়ে গ্রামছাড়া বড় মেয়ে প্রায় দেড় বছর পূর্বে জর্দান থেকে দেশে ফিরেন। দেশে ফেরার পর জামিল মিয়ার সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক তৈরি হয় তার। তবে ঘটনা জানাজানির পর থেকে অভিযুক্ত জামিল মিয়া গা ঢাকা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে জামিল মিয়ার বাবা আখলুছ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স জোৎস্না বলেন, মেয়েটি এসেছিল হাসপাতালে। অবৈধভাবে গর্ভপাত বেআইনি বলায় তারা চলে গেছে।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। থানায় কেউ অভিযোগও করেনি। খোঁজ নিয়ে দেখব।
এএ/আরআর-০৯