ব্যাংক কর্মকর্তাকে পেটালেন সাংসদের ভাই

ধর্মপাশা প্রতিনিধি


মে ০৩, ২০২১
১১:০১ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ০৩, ২০২১
১১:০১ অপরাহ্ন



ব্যাংক কর্মকর্তাকে পেটালেন সাংসদের ভাই

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের পাইকুরাটি নতুন বাজার এলাকায় স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বড় ভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ ও তার ছেলে তানভীর হোসেনে সাগরের মারধরে শিকার হয়েছেন  বিকাশ রঞ্জন সরকার (৫৫) নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা। আজ সোমবার (৩ মে) বেলা সোয়া ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে একটি ঘরের ভেতর এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

বিকাশ রঞ্জন সরকার বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে পরিদর্শক পদে কর্মরত রয়েছেন। তার বাড়ি ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধর্মপাশা গ্রামে।

ধর্মপাশা থানার পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধর্মপাশা গ্রামের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা বিকাশ রঞ্জন সরকারের উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের নতুন বাজারে ১৯ শতক জায়গা রয়েছে। এই জায়গার মধ্যে পাঁচ শতক তিনি অন্যত্র বিক্রি করেছেন তিনি। সোমবার সকাল ১১টার দিকে তিনি পাইকুরাটি ইউনিয়নের পাইকুরাটি নতুন বাজার এলাকায় যান। সেখানে লোকজন নিয়োজিত করে তার জায়গার মধ্যে থাকা একটি টিনের ঘর ভাঙতে শুরু করেন। বেলা সোয়া ১টার দিকে স্থানীয় সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের আপন বড় ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ (৫৮) পাইকুরাটি নতুন বাজারে যান। এ সময় সেখানে বিকাশ রঞ্জন সরকারকে দেখতে পেয়ে তিনি কেন তাকে না জানিয়ে পাঁচ শতক জায়গা অন্যত্র বিক্রি করা হয়েছে তা জানতে চান। এ নিয়ে দু'জনের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ ও তার ছেলে তানভীর হোসেন সাগর (২৪) মিলে বিকাশ রঞ্জন সরকারকে কিল-ঘুষি মারেন। নিজেকে বাঁচাতে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা দৌড়ে গিয়ে পাইকুরাটি নুতন বাজার এলাকার একটি বসতঘরে আশ্রয় নেন। এ অবস্থায় হাজী মাসুদ ও তার লোকজন ওই বসতঘরের বাইরে অবস্থান নেন এবং ব্যাংক কর্মর্তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

পরে মারধরের শিকার ব্যাংক কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার ও ধর্মপাশা থানার ওসি খালেদ চৌধুরীর মোবাইলে এবং ৯৯৯ নম্বরে কল করে ঘটনাটি জানান। এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বেলা আড়াইটার দিকে ওসি খালেদ চৌধুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে বিকাশকে ওই বসতঘর থেকে বের করে মোটরসাইকেলযোগে তাকে ধর্মপাশা উপজেলা সদরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন।

ব্যাংক কর্মকর্তা বিকাশ রঞ্জন সরকার বলেন, 'সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তার আপন বড় ভাই মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ ও তার ছেলে সাগর মিলে আমাকে কিল-ঘুষি মেরেছে। ওরা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমি দৌড়ে গিয়ে একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছি। সেখানে আমাকে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ আমাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করেছে। আমি এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেব।'

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাংসদের বড় ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন হাজী মাসুদ বলেন, 'আমি ও আমার ছেলে মিলে কাউকে মারধর করিনি। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি ভিত্তিহীন।'

ধর্মপাশা থানার ওসি খালেদ চৌধুরী বলেন, 'অবরুদ্ধ করে রাখার মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয়নি। অভিযোগ পেলে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

 

এসএ/আরআর-০৩