তৌফিক রহমান চৌধুরী
মে ১৬, ২০২১
০৯:০৩ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ১৬, ২০২১
০৯:০৩ অপরাহ্ন
আমি তখন খুব ছোট। আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থাও সে সময় খুব শোচনীয়। ঈদ এসেছে, অথচ নতুন জামা কেনার সামর্থ্যটুকুও নেই। আমার পাশের বাড়ি ছিল বন্ধু শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আজির উদ্দিনের। তার বাবা তাকেসহ আমাকে নিয়ে সিলেট শহরে এসেছিলেন ঈদের জামা কাপড় কিনতে। সে বছরের ঈদ আনন্দের স্মৃতিটা আমি কোনওদিন ভুলিনি। কারণ এটাই ছিল ঈদের প্রকৃত আনন্দ ও ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের বহিঃপ্রকাশ।
এরকম অসংখ্য স্মৃতি জড়ানো আমার বেড়ে উঠার সময়। শৈশবে দেখেছি সহজ-সরল এবং আন্তরিক ঈদ। যেখানে ছিল একের অন্যের প্রতি সহানুভূতি-আন্তরিকতা। অন্যের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেওয়াই যেন ছিল ঈদের প্রকৃত আনন্দ। সেই ঈদ বর্তমান প্রজন্মের কাছে হয়ে গেছে লোক দেখানো আনন্দ। আন্তরিকতার মাত্রাও বহু অংশে কমে গেছে।
আমার শৈশবের ঈদ ছিল মা ও দাদা-দাদিকেন্দ্রিক। বাবা ছিলেন প্রবাসী, তাই তাঁকে শৈশবে কাছে খুব একটা পাইনি। যদিও বড় হয়ে মা বাবা দুজনকেই কাছে পেয়েছি। দীর্ঘকাল তাদের পাশে পেয়েছি। কিন্তু এবারের ঈদে আমি তাদেরকে খুব বেশি মিস করব। বিশেষ করে আমার মাকে। কারণ, গত বছর এপ্রিলে এক সপ্তাহর ব্যবধানে তাঁরা পরপারে চলে গেছেন।
ঈদে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে উৎসব ভাগাভাগি করে নেওয়ার আহ্বান থাকবে নতুন প্রজন্মের কাছে। লোকদেখানো উৎসব-আনন্দ ত্যাগ করে ঈদের প্রকৃত মহিমা অনুধাবন করতে হবে, আনন্দকে করতে হবে সহজ-সরল ও আন্তরিক। আমরা করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। করোনাকালে তাই এটাই চাওয়া-পৃথিবী মুক্ত হোক এই মহাদুর্যোগ থেকে।
লেখক : চেয়ারম্যান, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, সিলেট
এএফ/০১