করোনায় বৃদ্ধের মৃত্যু, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি


জুলাই ১২, ২০২১
০৭:৪৬ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১২, ২০২১
০৭:৪৬ অপরাহ্ন



করোনায় বৃদ্ধের মৃত্যু, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় আব্দুল হক (৭০) নামের এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। রবিবার (১১ জুলাই) দিবাগত রাত ২টায় সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে ৩ জন মৃত্যুর কথা বলা হলেও এ পর্যন্ত নবীগঞ্জ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, গত ১১ দিনে ১১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা লাফিয়ে বাড়তে থাকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। 

নবীগঞ্জ হাসপাতাল ও বিভিন্ন সূত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর গ্রামের মৃত ফরজ মিয়ার ছেলে আব্দুল হক সরদার (৭০) করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৮ জুলাই নবীগঞ্জ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। তার অবস্থার অবনতি ঘটলে রবিবার দুপুরে তাকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার দিবাগত রাত ২টায় তার মৃত্যু হয়।

সোমবার (১২ জুলাই) সকালে জানাজার নামাজের সময় জানিয়ে এলাকায় মাইকিং করার খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃতের জানাজার নামাজ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়।

নবীগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনার প্রথম ঢেউয়ে মারা যান ৩ জন। তারা হলেন পৌর এলাকার গয়াহরি গ্রামের জগদীশ দাশ (৬১), করগাঁও ইউনিয়নের মুক্তাহার গ্রামের গনেন্দ্র লাল দাশ (৬৫) ও একই ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার চিত্ত রঞ্জন দাশ (৭০)। দ্বিতীয় ঢেউয়ে মারা যান ৭ জন। তারা হলেন- করগাঁও ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে শাহ এমরান আলী (৬৫), একই ইউনিয়নের বড় সাখোয়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুল মাহিদ (৫৫), নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের মৃত মামদ মিয়া চৌধুরীর পুত্র কামরুল মিয়া (৪৭), ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোলডুবা গ্রামের মৃত কঠা মিয়া চৌধুরীর ছেলে খালেদ আহমদ চৌধুরী (৫৬), ৫ জুলাই রাতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের বিমল দাশ (৩৮) ও রবিবার দিবাগত রাতে সর্বশেষ মারা যাওয়া আউশকান্দি ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর গ্রামের আব্দুল হক সরদার। এর প্রায় ৩/৪ মাস পুর্বে তার ছোট ভাই আব্দুল ওয়াহিদ সরদার (৪০) করোনায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন।

গত ১১ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত জুন মাসে ১১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলে শনাক্ত হয়েছিলেন ২৩ জন। এ পর্যন্ত হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৪৮ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৭ জন। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় রবিবার ২ জনকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছিল। এদের মধ্যে আব্দুল হক সরদার মারা গেলেন রবিবার দিবাগত রাতে। 

নবীগঞ্জে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১ হাজার ৮৫৭ জনের। এর মধ্যে ২৮৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২৩১ জন। 

জানা গেছে, ইদানিং নবীগঞ্জের মানুষের মাঝে পরীক্ষা করানোর প্রবণতা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ১১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৪৫ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। আক্রান্তের হার প্রায় ৪৬ শতাংশ। ইতোপূর্বে আক্রান্তদের মধ্যে গতকালের রিপোর্ট অনুযায়ী ১ জনও সুস্থ হননি। আক্রান্তদের মধ্যে ৪৮ জন রয়েছেন হোম আইসোলেশনে। ৮ জন ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ইউনিটে। এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি পাওয়ায় ২ জনকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে সেখানে ১ জনের মৃত্যু হয়।


এএম/আরআর-০৭