দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুলাই ১৩, ২০২১
১০:৩১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১৩, ২০২১
১০:৩১ পূর্বাহ্ন



দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনেক বড় ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব বলে অভিহিত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। তিনি নয়াদিল্লিতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ প্রতিষ্ঠায় ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর)’ ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

আইসিসিআর মহাপরিচালক দীনেশ কে পাটনায়েক ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক পি সি যোশি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এমওইউ সই করেন। আইসিসিআর প্রেসিডেন্ট বিনয় সহস্রবুদ্ধে ও নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান এমওইউ সই প্রত্যক্ষ করেন। বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।

আইসিসিআর প্রেসিডেন্ট বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো অবিসংবাদিত নেতার স্মরণে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ প্রতিষ্ঠা করতে পেরে আমরা গর্বিত।”

হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ প্রতিষ্ঠাকে সময়োপযোগী উদ্যোগ বলে অভিহিত করেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ২০২১ সাল বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত বিশেষ একটি বছর। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরের সময় উল্লেখ করেছেন এটি ‘ত্রিবেণির’ বছর—মুজিববর্ষ উদযাপন, বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী।

শ্রিংলা বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার জন্য মহান যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি একটি রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছেন। তাঁকে বঙ্গবন্ধু বা জাতির জনক যে নামেই ডাকা হোক না কেন, নিঃসন্দেহে তিনি অত্যন্ত বড় একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব, যিনি আক্ষরিক অর্থেই রাষ্ট্রের ভাগ্য গড়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব তাঁর দেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির ভিত্তিও রচনা করেছিলেন। বাংলাদেশ বর্তমানে প্রবৃদ্ধির বড় ইঞ্জিনগুলোর অন্যতম। এ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চমৎকার। আর্থ-সামাজিক সূচকগুলোতেও দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। অনেক খাত আছে, যেগুলোতে আমরা বাংলাদেশ থেকে শিখেছি এবং আমরা এই শিক্ষা নেওয়া অব্যাহত রাখব।’

বঙ্গবন্ধুকে ‘ভারত-বাংলাদেশি মৈত্রী ও বন্ধুত্বপূর্ণ জোরালো সম্পর্কের প্রবক্তা’ হিসেবে উল্লেখ করে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘শেখ মুজিব বুঝতে পেরেছিলেন ভারতীয় ও বাংলাদেশিরা ইতিহাসের ভাগীদার। আমি আনন্দিত যে আজ আমরা একসঙ্গে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি। ভারত ও বাংলাদেশ তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে পরস্পরকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া অব্যাহত রেখেছে।’

দুই দেশের নৈকট্য, বোঝাপড়া ও অর্জনকে অনন্য হিসেবে উল্লেখ করে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন,  ভারতের পররাষ্ট্রনীতির মূল দুই ভিত্তি ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ ও ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির অভিন্ন ক্ষেত্র বাংলাদেশ। কভিড মহামারির পর মোদির প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে যাওয়ার মধ্য দিয়েও এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

শ্রিংলা বলেন, কোনো ধরনের উগ্রবাদ ও কট্টরপন্থার বিরুদ্ধে অত্যন্ত জোরালো কণ্ঠস্বর ছিলেন শেখ মুজিব। আজ মহামারি যখন বিশ্বে বিভেদ সৃষ্টি করছে, তখন বন্ধুত্বের বার্তা বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ভারতে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। তাঁর সংগ্রাম, অর্জন ও মূল্যবোধ ভারতীয়দের অনুপ্রাণিত করা অব্যাহত রাখবে।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রতিষ্ঠাকে মহান নেতা, তাঁর জীবন ও কর্মের প্রতি সম্মাননা—ত্রিবেণি হিসেবে অভিহিত করেন শ্রিংলা। এর মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় দেওয়া ঘোষণার বাস্তবায়ন হলো। 

আরসি-০৬