তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের চলে যাওয়ার ১০ বছর

সিলেট মিরর ডেস্ক


আগস্ট ১৩, ২০২১
০১:৩৮ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ১৩, ২০২১
০১:৩৮ অপরাহ্ন



তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের চলে যাওয়ার ১০ বছর

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আশফাক মিশুক মুনীরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

২০১১ সালের এই দিনে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারা নিহত হন। তাদের সঙ্গে আরও তিনজন নিহত হন। ওই তিনজন হলেন চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল।

তারেক মাসুদ তার সহধর্মিণী ক্যাথরিন মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ নয় সদস্যের একটি দল নতুন সিনেমা ‘কাগজের ফুল’-এর লোকেশন দেখতে মানিকগঞ্জে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন ‘মাটির ময়না’র পরিচালক তারেক মাসুদ। ১৯৮৯ সালে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে ‘আদম সুরত’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন তারেক মাসুদ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১৯৯৫ সালে তার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’ (১৯৯৬) প্রশংসিত হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। এরপর ২০০২ সালে তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’ দেশের চলচ্চিত্রকে নিয়ে যায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

ক্যামেরা ‘ডিরেক্টর’ হিসেবে কাজ করে যেসব বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আশফাক মিশুক মুনীর ছিলেন অন্যতম। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আশফাক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিও গ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সবার কাছে মিশুক মুনীর নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। তারেক মাসুদের সিনেমা ‘রানওয়ে’র প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন তিনি। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তাদের দু’জনকে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করে সরকার।

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরকে বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত ও তিনজন গুরুতর আহত হন। 

ওই ঘটনার পর ১৪ আগস্ট মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চৌগাছা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল চালক জামিরকে আটক করে। ঘিওর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের চালক জামির হোসেনকে একমাত্র আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের আট মাস পর মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আল-মাহমুদ ফায়জুল কবীর ২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তারিখে ঘোষিত রাতে বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। রায়ের পর জামির হোসেনকে প্রথমে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগার ও পরবর্তীতে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছিল।

২০২০ সালের ১ আগস্ট বাসচালক জামির হোসেন (৬০) শহীদ সোহরাওয়ার্দী হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে বন্দী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

আরসি-০৯