সিলেটে হচ্ছে আরও ১৭ ফায়ার স্টেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক


নভেম্বর ১০, ২০২১
১২:৪৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ১০, ২০২১
০২:২৯ পূর্বাহ্ন



সিলেটে হচ্ছে আরও ১৭ ফায়ার স্টেশন
# চার জেলার ১৫ উপজেলায় ১৫টি # সিলেট নগরে হবে আরও দুটি

সিলেট বিভাগের চার জেলার ১৫টি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া নগরে আরও দুটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে কয়েকটি স্টেশনের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকটি। 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিলেটের সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম ভ‚ঞা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, উপজেলা ছাড়াও সিলেট নগরের বিমানবন্দর সড়ক ও টুকেরবাজার এলাকায় দুটি ফায়ার স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যেসব উপজেলায় নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে সেগুলো শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে। এ লক্ষ্যে জনবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এরই মধ্যে বরাদ্দ হয়েছে।’

বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলার পাঁচ উপজেলায় পাঁচটি, সুনামগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় পাঁচটি, হবিগঞ্জের চার উপজেলায় চারটি এবং মৌলভীবাজারে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হবে। 

সিলেটের কানাইঘাট, বিশ্বনাথ, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও বালাগঞ্জ উপজেলায় ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হবে। সুনামগঞ্জের দিরাই, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, শাল্লা ও ধর্মপাশায় স্থাপন হবে ফায়ার স্টেশন। এছাড়া হবিগঞ্জের চুনারুঘাট, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই, বাহুবল এবং মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে নতুন ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ হচ্ছে। 

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগে বর্তমানে ২৬টি স্টেশন চালু আছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় নয়টি, হবিগঞ্জে পাঁচটি, মৌলভীবাজারে ছয়টি এবং সুনামগঞ্জে ছয়টি। নতুন ১৭টি স্থাপিত হলে বিভাগে ফায়ার স্টেশন হবে ৪৩টি।

জানা গেছে, এর মধ্যে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ফায়ার স্টেশন এরই মধ্যে উদ্বোধন হয়েছে, তবে এখনও হস্তান্তর হয়নি। দিরাই, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলায় নির্মাণ কাজ শেষ, উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। শাল্লায় ৯০ শতাংশ ও ধর্মপাশায় ৯৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে, আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় এখনও কাজ শুরু হয়নি। লাখাই ও বাহুবলে ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

সিলেটের কানাইঘাট, বিশ্বনাথ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় কাজ এগিয়ে থাকলেও গোয়াইনঘাট উপজেলায় ফায়ার স্টেশন স্থাপনের কাজ পিছিয়ে রয়েছে। আর বালাগঞ্জ উপজেলায় স্টেশন স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণ কেবল সম্পন্ন হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতদিন সিলেটে পর্যাপ্ত ফায়ার স্টেশন না থাকায় দুর্যোগের সময় অন্য উপজেলা বা শহর থেকে দমকল কর্মীরা গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাতেন। এতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের। এতদিন সিলেটের পর্যটনসমৃদ্ধ উপজেলা গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ছিল না। জাফলং, বিছনাকান্দি ও ভোলাগঞ্জ সাদাপাথরে বিভিন্ন সময় ঘুরতে যাওয়া পর্যটক ডুবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা ও সিলেট সদর থেকে দমকল বাহিনী দূরবর্তী উপজেলাগুলোতে গিয়ে অভিযান চালাতে হতো। কানাইঘাটসহ সীমান্তবর্তী এসব উপজেলায় আগুন লাগাসহ যেকোনো দুর্যোগে অন্য উপজেলার সহযোগিতা নিতে হতো।

পর্যাপ্ত জনবল ও উন্নত যন্ত্রপাতির অভাবও ছিল। এ কারণে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষয়ক্ষতিও হতো বেশি। তবে, ২০১২ সালে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১৫৬টি উপজেলা সদর/স্থানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এক বছরের জন্য সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক বলেন, ‘স্টেশনগুলো চালু হলে সিলেট বিভাগে কোনো উপজেলা ফায়ার স্টেশনবিহীন থাকবে না। এর ফলে দুর্যোগকালে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে।’ এ ছাড়া সিলেটের চারদিকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করে নিরাপদ সিলেট গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

দেশের প্রতিটি উপজেলায় নূন্যতম একটি করে ফায়ার স্টেশন স্থাপনের অংশ হিসেবে এসব স্টেশন স্থাপন হচ্ছে। ২০২১ সালে আরও একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দেশে স্টেশনের সংখ্যা হবে ৫৬৫টি এবং জনবলের সংখ্যা বেড়ে হবে ১৬ হাজার।

এসএইচ/আরসি-০১