খেলা ডেস্ক
জানুয়ারি ৩১, ২০২২
০১:৪৫ অপরাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ৩১, ২০২২
০১:৪৫ অপরাহ্ন
শেষ চার বলে দরকার ছিল ১৪ রান। বোলার ডিজে ব্র্যাভো। স্ট্রাইকে ছিলেন বধ্বংসী মেজাজে থাকা সেকুজে প্রসন্ন। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেন।
তৃতীয় বলে তিনি ফিরেন লং অনে লিনটটের চোখ ধাঁধানো এক ক্যাচে। আম্পায়ার নট আউটের সফট সিগন্যাল দিয়েছিলেন। রিপ্লেতে দেখা যায় অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়েছেন বদলি হিসেবে নামা লিনটট। এভাবেই শেষ হয়ে যায় খুলনার জয়ের আশা। বরিশাল তাদের তৃতীয় জয় তুলে নেয় ৬ রানে।
রান তাড়ায় নেমে খুলনা টাইগার্সকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন আন্দ্রে ফ্লেচার এবং সৌম্য সরকার। দুজনেই চার মেরে রানের খাতা খোলেন। তবে বেশিদূর যেতে পারেনি এই জুটি। ঝড়ো শুরু করা সৌম্য পথ হারিয়ে ২২ বলে ৩ চারে ১৩ রান করে সাকিব আল হাসানের শিকার হন। লং অনে সহজ ক্যাচ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মেজাজে থাকা সাকিবের ঘূর্ণিতে স্রেফ দিশেহারা ছিলেন খুলনার ব্যাটাররা।
বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডারের শেষ ওভারের শেষ বলেই বোল্ড হয়ে ফিরেন ১২ বলে ৬ রান করা রনি তালুকদার। এরপর নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে খুলনা টাইগার্স। ৩৫ রানের মাঝে তারা ৪ উইকেট হারায়। ফ্লেচার ২৩ বলে ১২ আর থিসারা পেরেরা ৪ রানে আউট হন। ১০ম ওভারের তৃতীয় আর শেষ বলে এই দুটি শিকার ধরেন ডিজে ব্র্যাভো।
এই অবস্থা থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন অধিনায়ক মুশফিক এবং ইয়াসির আলী। বিশেষ করে ইয়াসির বেশ বিধ্বংসী ছিলেন। একসময় বলের সঙ্গে রানের পার্থক্য বাড়ছিল। ১০ বলে যখন ৩২ রান দরকার, তখন শফিকুল ইসলামের বলে তৌহিদ হৃদয়ের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে শেষ হয় মুশফিকের ২২ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩৩ রানের ইনিংস। ভাঙে ৫০ বলে ৭৯ রানের জুটি।
শেষের দিকে অনেক চেষ্টা করেও ম্যাচ জেতাতে পারেননি ইয়াসির। শেষ বলে মেহেদি হাসান ছক্কা মারলেও ৬ রানে হেরে যায় খুলনা টাইগার্স। তারা থামে ৬ উইকেটে ১৩৯ রানে। ইয়াসির ৩৪ বলে ৪ চার ৩ ছক্কায় ৫৭* রানে অপরাজিত থাকেন। ব্র্যাভো ৪০ রানে ৩টি আর সাকিব মাত্র ১০ রানে ২ উইকেট নেন।
এর আগে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশাল ১৮.৫ ওভারে ১৪৫ রানে অল-আউট হয়ে যায়। বরিশালের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন দুই ক্যারিবিয়ান সুপারস্টার ক্রিস গেইল আর ডোয়াইন ব্র্যাভো। মেহেদি হাসানের করা প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান নিতে পেরেছন ক্রিস গেইল! পরের ওভারে খালেদ আহমেদকে পরপর দুই বাউন্ডারি মেরে মুশফিকের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন ব্র্যাভো (৯)।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে এসে এই পেসার তুলে নেন আরেক মহাতারকা ক্রিস গেইলকে। খালেদের গুড লেন্থের বলটি ডিফেন্ড করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান ৯ বলে ১ বাউন্ডারিতে ৪ রান করা ক্যারিবিয়ান দানব। এর তৌহিদ হৃদয়ও রান-আউট হয়ে যান। ২৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক সাকিব আর নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় বরিশাল।
ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। শান্তর রান শুরুতে বলের চেয়ে কম ছিল, এরপর ধীরে ধীরে তিনি উল্টোদিকে বাড়াতে শুরু করেন। দুজনের জুটি দারুণ জমে যায়। এমন সময় আক্রমণে আসেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। তার বলে ইয়াসির আলীর তালুবন্দি হয়ে ফিরেন ২৭ বলে ২ চার ৩ ছক্কায় ৪১ রান করা সাকিব। অবসান হয় ৫৯ বলে ৭৯ রানের চতুর্থ উইকেট জুটির।
১৬তম ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তকে ফেরান থিসারা পেরেরা। লঙ্কান অল-রাউন্ডারের বলে ইয়াসিরের তালুবন্দি হয়ে থামে শান্তর ৪০ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় ৪৫ রানের ইনিংস। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বরিশাল। তারা অল-আউট হয় ১৪৫ রানে। নুরুল হাসান (৯ বলে ১০) আর মুজিব উর রহমান (৬ বলে ১২) ছাড়া কেউ দুই অংক ছুঁতে পারেননি। ৪ ওভারে ৪১ রানে ৩ উইকেট নেন খালেদ। ২টি করে নেন ফরহাদ রেজা এবং কামরুল ইসলাম রাব্বি।
আরসি-১৩