সিলেটের দর্শকহীন মাঠে শূন্যতা ঘুচালেন তারা

ক্রীড়া প্রতিবেদক


ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
০২:২০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
০৫:০৯ পূর্বাহ্ন



সিলেটের দর্শকহীন মাঠে শূন্যতা ঘুচালেন তারা

অতিমারি করোনা প্রতিরোধে জৈব সুরক্ষা বলয়ের কারণে মাঠে ছিলেন না দর্শক। স্টেডিয়ামের সীমানার বাইরে দূরের টিলায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখেছেন উৎসুক মানুষজন। বিপিএলে এবার দেশের অন্য ভেন্যুগুলোর মতো সিলেটের গ্যালারিও ছিল দর্শকশূন্য। তবে নাই নাই করেও শেষতক একেবারে ফাঁকা থাকেনি গ্যালারি। স্টেডিয়ামে নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেই শূন্যতায় কিছুটা হলেও পূর্ণতা দিয়েছেন। পাশাপাশি গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে  টিম অফিসিয়ালদের অনেকে দর্শক ঘাটতি পূরণ করেছেন। 

সিলেটের ব্যাটারদের চার-ছয় কিংবা বোলাররা উইকেট নিলে যেমন উল্লাস করছিলেন তারা। তেমনি ব্যর্থতায় দর্শকের মতোই তারাও প্রকাশ করেছিলেন হতাশা। বুধবার সিলেটপর্বের শেষ ম্যাচে তাদের সিলেট সানরাইজার্সকে সমর্থনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। প্রতি ম্যাচেই দায়িত্বের ফাঁকে অবসর সময়ে সিলেটের এই ফ্রাঞ্চাইজিকে সমর্থন দিতে দেখা গেছে তাদের।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বরতদের কর্মস্থল সিলেট। তবে তাদের বেশিরভাগের গ্রামের বাড়ি এই অঞ্চলে নয়। দেশের বিভিন্ন জেলার নানা প্রান্ত থেকে এসেছেন একেকজন। তবে সিলেটের মাঠে যখন খেলা হচ্ছে সিলেট দলের, তখন তারা সবাই সিলেটের সমর্থক হয়ে যান। তাদের সমর্থন আর অনুপ্রেরণায় দর্শকশূন্য মাঠে খানিকটা হলেও এনেছিল প্রাণের সঞ্চার। 


এমন সমর্থনের প্রেরণা কোথা থেকে সেটা জানার অবশ্য সুযোগ হয়নি। কারণ দায়িত্বরতদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে বারণ আছে। তবে কর্মস্থলও যে কখনও কখনও আবেগের জায়গা দখল করে বসে সেটা তাদের দেখে বুঝার বাকি ছিল না।

গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড জৈব সুরক্ষা বলয়ের অন্তর্গত। এ গ্যালারির দর্শক সারিতে বসা সিংহভাগই জৈব সুরক্ষা বলয়ের। তাই সেখানে থাকা দর্শকদের কারও সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি। কথা বলার সুযোগ না হলেও বিশেষ নজর কেড়েছেন খুলনা টাইগার্সের সমর্থক ‘টাইগার বয়’। টাইগার সুয়েবের মতো তিনিও বাঘের পোশাক গায়ে চড়িয়েছিলেন।

খুলনার চার-ছক্কা-উইকেটে প্রকাশ করেছেন উচ্ছাস। ব্যর্থতায় হননি হতাশ। চিৎকার করে দিয়ে গেছেন খুলনা টাইগার্স খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণা। বুধবার দুপুরে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ম্যাচে তার অনুপ্রেরণায় যদিও দলকে জেতাতে পারেনি। তবে মাঠের দর্শকশূন্যতা পূরণে তিনি রেখে গেছেন ভূমিকা।

জৈব সুরক্ষা বলয়ের কারণে মাঠে খেলা দেখা যাবে না জানা সত্বেও অনেকেই চেষ্টা করেছিলেন মাঠে খেলা দেখার। স্টেডিয়াম ফটকের সামনে দায়িত্বরতদের অনেক অনুনয় বিনয়ও করেছেন। তবে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে।

তাদেরই একজন মুস্তাহিদ হোসেন। সিলেট নগরের একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্টেডিয়ামের পাশেই তার বাসা। বাসা থেকে মিনিট পাঁচের হাঁটা পথের স্টেডিয়ামে হচ্ছে বিপিএলের সিলেটপর্ব। তাই মাঠে বসে খেলা দেখার ইচ্ছা ছিল তার।


সিলেট মিরর-এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘এত কাছে খেলা হচ্ছে। প্রিয় খেলোয়াড় তামিম এই মাঠে খেলছেন। সঙ্গে জাতীয় দলের অন্য খেলোয়াড়রাও খেলছেন। কিন্তু খেলা দেখতে পারছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘গেইটের সামনে থাকা ভাইয়াদের অনেক করে বলেছি। পাঁচ মিনিটের জন্য যেন খেলা দেখার সুযোগ দেন। কিন্তু কেউ খেলা দেখার সুযোগ দেননি। বাড়ির কাছের মাঠে প্রিয় খেলোয়াড় খেললেও তাকে সরাসরি দেখা হলো না।

আরসি-০১