শিরোপা জিততে বরিশালের টার্গেট ১৫২ রান

খেলা ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২
০৭:৫৩ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২
০৭:৫৩ অপরাহ্ন



শিরোপা জিততে বরিশালের টার্গেট ১৫২ রান

বিপিএল ইতিহাসে সাত আসরে অংশ নিয়েও একবারও শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি বরিশাল। ২০১৬ সালে তৎকালীন ঢাকা ঢায়নামাইটসের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবার বরিশালের ঢেরায়। দলও শিরোপা থেকে মাত্র একহাত দূরে। দুইবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার তৃতীয় শিরোপার স্বপ্ন ভঙ্গ করতে হলে সাকিবের বরিশালকে করতে হবে ১৫২ রান।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল কুমিল্লা। তবে এক সুনীল নারিন ছাড়া খেলতে পারলেন না কেউই। এদিন মিরপুরে আবারও দেখা গেছে সেই বিধ্বংসী নারিনকে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে নেমে বিপিএল ইতিহাসের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছিলেন ক্যারিবীয় এ কিংবদন্তী। ছয় ছক্কা ও পাঁচ চারের মারে মাত্র ১৬ বলে করেছিলেন ৫৭ রান। ফাইনালেও একই রূপে হাজির নারিন।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই আফগান তারকা স্পিনার মুজিব উর রহমানের ওপর চড়াও হন নারিন। বলকে ফুটবল বানিয়ে স্কোরবোর্ডে জমা করেন ১৮ রান। শফিকুলের করা দ্বিতীয় ওভারেও চলল চার-ছক্কার চোখ জুড়ানো প্রদর্শনী। দুই ছয় এক চার ও সিঙ্গেলে তুলে নিলেন ১৮ রান। দুই ওভার শেষে কুমিল্লার সংগ্রহ ৩৬ রান! 

তৃতীয় ওভারে বল হাতে তুলে নিয়েই সাফল্য পান বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাকিবের বল বুঝে উঠার আগেই সব শেষ। ভেঙে যায় স্টাম্প। ৬ বল খেলে ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন। এর মধ্য দিয়ে চলতি আসরে নিজের ১৬তম উইকেটের দেখা পেলেন সাকিব।

লিটন আউট হলেও ব্যাট হাতে নারিন তাণ্ডব চলছিল। শেষমেশ ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মেহেদী হাসান রানার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়লেন শান্তর হাতে। তবে তার আগেই পাঁচ চার ও পাঁচ ছয়ে সাজানো ২৩ বলের ইনিংসে টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে ১১তম ফিফটি তুলে নিলেন।

নারিনের জ্বলে উঠার দিনে ব্যাট ব্যর্থ ছিলেন লিটন দাস। এরপর রান আউটের ফাঁদে পড়লেন ওয়ানডেতে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা কুমিল্লার আরেক ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয়। ব্রাভোর দারুণ ফিল্ডিং আর নুরুল সোহানের স্টাম্পিংয়ে মাত্র ৭ বলে ৮ রান করেই ফিরতে হলো তাকে।

শুরুর ঝড় ধরে রাখতে পারল না কুমিল্লা। পরপর উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে নাফিসা কামালের দল। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার বার্তা দেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তী ব্যাটার ফ্যাফ ডু প্লেসির আসরজুড়ে দেখার মতো ইনিংস ছিল কেবল একটি। তবে খুলনার বিপক্ষে তার শতরানের সেই ইনিংসেও দল জিততে পারেনি। ফাইনালের মঞ্চেও হতাশ করলেন ফ্যাফ। মুজিবের প্রথম শিকার ৭ বলে মাত্র ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। 

২ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৬ করা কুমিল্লার ৯ ওভার শেষে সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৮৬। কুমিল্লা তাদের তৃতীয় শিরোপার খোঁজে থাকলেও আসরজুড়ে তাদের ব্যাটিংয়ে বড় হতাশার নাম অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দলের বিপদের সময়েও হাল ধরতে পারলেন না। ব্রাভোর বল খোঁচা মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন উইকেটকিপার সোহানের হাতে। গ্লাপসবন্দী করতে ভুল করেনি বরিশাল উইকেটকিপার। কায়েস ফিরলেন ১২ বলে সমান সংখ্যক রান করে। ফাইনালের মঞ্চে টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রাখা আরিফুল হকও পারলেন না প্রতিদান দিতে। মুজিবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে রানের খাতা খোলার আগেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরলেন। 

শেষদিকে কুমিল্লার ভাগ্য নির্ভর করছিল মঈন আলীর ওপর। দলের স্কোরকে বড় করারও যথেস্ট সুযোগ ছিল তার সামনে। কিন্তু ইংলিশ এ অলরাউন্ডার তা পারলেন কই। উইকেটে থিতু হতে পারলেও ঝড় তুলতে পারলেন না। রান আউট হওয়ার আগে করেছেন ৩২ বলে ৩৭ রান । যা তার নামের পাশে একদম বেমানান।

২০ তম ওভারটা রাঙিয়েছেন বরিশালের বোলার শফিকুল। চট্টগ্রামের মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর পর তার সামনেও ছিল হ্যাটট্রিকের হাতছানি। তবে সেই মাইলস্টোনের দেখা না পেলেও ঘটনাবহুল ওভারটিতে তুলে নিলেন উইকেট দুটি উইকেট। কুমিল্লা থামল ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানে।

আরসি-০৮