ধর্মপাশায় মালয়েশিয়া পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাৎ

শামীম আহমেদ, ধর্মপাশা প্রতিনিধি


অক্টোবর ০৫, ২০২২
০৮:৫৮ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০৫, ২০২২
০৮:৫৮ অপরাহ্ন



ধর্মপাশায় মালয়েশিয়া পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাৎ

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় দরিদ্র এক তরুণকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে প্রতারণা মাধ্যমে সাড়ে ৪ লাখ টাকা আত্মসাতে সুবিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর মা কোকিলা আক্তার (৪৪)।

প্রচারণার শিকার তরুণের নাম সাগর মিয়া (২২)। তিনি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত রমজান মিয়ার ছেলে।

গতকাল মঙ্গলবার (৪অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনওর) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

তিনবছর মেয়াদে বৈধভাবে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে দুবাই পাঠিয়ে দিয়ে  ওই তরুণের মায়ের কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলেছে অভিযোগে বলা হয়েছে। ঘটনার জন্য উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা দবির তালুকদারকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। 

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের কুকিলা আক্তারের স্বামী রমজান মিয়া পাঁচ বছর বছর আগে মারা যাওয়ার পর তাঁর ছেলে মেয়েদের নিয়ে সিলেটের ভোলাগঞ্জ এলাকায় শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বিধবা  ওই নারীর দ্বিতীয় ছেলে সাগর মিয়াকে (২২) মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য নানাভাবে প্রলোভন দিয়ে আসছিলেন একই উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের দবির তালুকদার (৪২)।  সাগর মিয়া মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য তাদের বিধবা মায়ের ওপর  নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।  এক পর্যায়ে ছেলের আবদার মেটাতে মা কোকিলা আক্তার ছেলেকে মালয়েশিয়া পাঠাতে সম্মত হন।

দবির তালুকদার  মালয়েশিয়ার হোটেলে হোটেল বয় হিসেবে তিন বছর মেয়াদে সাগর মিয়াকে বৈধভাবে কাজ দেওয়ার শর্তে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাজাপুর গ্রামের কয়েকজন গ্রাম্য মাতব্বরের সামনে সাড়ে চার লাখ টাকা দবির তালুকদারকে বুঝিয়ে দেন ওই নারী।  দবির টাকা বুঝে পেয়ে চলতি বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহে মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে সাগরকে ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই পাঠিয়ে দেন। দুবাই গিয়ে  ওই তরুণ বিপদে পড়েন। খাবার, থাকাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। দুবাইয়ে থাকা নিজ গ্রামের কয়েকজন আত্বীয় সাগরকে আশ্রয় দেন এবং থাকা খাওয়াসহ বৈধভাবে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। 

ভুক্তভোগীর মা কোকিলা আক্তার বলেন, সিলেটের ভোলাগঞ্জে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আমাদের পেটে ভাত জুটে। আমি গ্রাম্য মাতব্বরদের সামনে আমার ছেলে সাগরকে মালয়েশিয়ায় হোটেলে তিন বছরের জন্য কাজ দেওয়ার শর্তে দবির তালুকদারের হাতে সাড়ে চার লাখ টাকা তুলে দিয়েছিলাম। দবির আমার ছেলেকে মালয়েশিয়ায় না পাঠিয়ে দুবাই পাঠিয়ে সাড়ে চার লাখ আত্মসাত করেছে।  আমার ছেলে দুবাই গিয়ে খুবই বিপদে পড়ে। সেখানে আমাদের গ্রামের কয়েকজন আত্বীয় আমার ছেলেকে খাওয়াদাওয়া ও বৈধভাবে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। আমি এ ঘটনায় সুবিচার চেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ইউএনও স্যারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি।

উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা  দবির তালুকদার বলেন, আমি মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে কারও কাছ থেকে কোনো টাকা পয়সা নিইনি। বৈধভাবে দুবাই পাঠানোর কথা বলে টাকা নেওয়া হয়েছিল। আমি বৈধভাবে তাকে দুবাই পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। এখন আমাকে জড়িয়ে নানাধরণের মিথ্যা অপবাদ রটানো হচ্ছে।

ইউএনও মো.মুনতাসির হাসান বলেন, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। তদন্ত করে  এ ব্যাপারে  বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এএফ/০৪