ওয়ার্নারকে থামাতে পারেনি ইনজুরিও

খেলা ডেস্ক


অক্টোবর ২২, ২০২৩
১১:২৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ২২, ২০২৩
১১:২৪ পূর্বাহ্ন



ওয়ার্নারকে থামাতে পারেনি ইনজুরিও

পাকিস্তানকে পেলেই যেন জ্বলে ওঠেন ডেভিড ওয়ার্নার। আরও একবার বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করলেন বাঁহাতি এ ওপেনার। এই নিয়ে টানা চার ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন অসি এই স্ট্রোকমেকার। শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে শুধু ওয়ার্নারই নন, তাণ্ডব চালিয়েছেন মিচেল মার্শও। দুই ওপেনারের আগুনে ব্যাটিংয়ে বেঙ্গালুরুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ উইকেটে ৩৬৭ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানকে ৩০৫ রানে থামিয়ে চিন্নাস্বামীর ব্যাটিং স্বর্গে ৬২ রানে জিতে অস্ট্রেলিয়া।

এদিন বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি গড়েন ওয়ার্নার ও মার্শ। তাদের ওপেনিং জুটি ভাঙে ২৫৯ রানে। একই সঙ্গে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী জুটিতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ এবং যে কোনো জুটিতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দু’বার জীবন পাওয়া ওয়ার্নার ১২৪ বলে ৯ ছক্কা ও ১৪ চারে খেলেন ১৬৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস। আর মার্শ করেছেন ১০৮ বলে ১২১ রান। তবে রেকর্ডময় সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানকে হতাশায় ডুবিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কারও বাগিয়ে নিয়েছেন ওয়ার্নার। ওয়ানডেতে এ নিয়ে ১৮ বার ও বিশ্বকাপের তিন আসর মিলিয়ে পঞ্চমবার সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন তিনি। টানা চার সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের বিপক্ষেও ম্যাচসেরা হলেন টানা চতুর্থবার।

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় জয় পেলেও এই ম্যাচে কিছু ঘাটতির জায়গা খুঁজে পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার। কারণ অস্ট্রেলিয়া যেই পজিশনে ছিল, সেখান থেকে ওয়ার্নারের ২০০ আর দলীয় ৪০০ করার লক্ষ্যে ছিল তাদের। তবে মার্শের বিদায়ের পরই রানের গতি কমে যায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। ৪৩তম ওভারে ৩২৫ রান থেকে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে অসিরা করেছে ৩৬৭ রান। শেষ ৪৬ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে অসিরা যোগ করেছে মাত্র ৪২ রান।

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ডেভিড ওয়ার্নার বলেন, ‘মার্শের সঙ্গে খেলাটা অসাধারণ। যখনই আমরা উইকেটের সঙ্গে তাল মেলাতে পেরেছি, তাদের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলেছি। মাঠে এমন পারফরম্যান্স করা সত্যিই আনন্দের। আমি একটু ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছিলাম। এমন মাঠে সুযোগগুলো আপনাকে কাজে লাগাতে হবে। মিচেলের সঙ্গে জুটি গড়াই ছিল লক্ষ্য। আমরা (ওয়ার্নার-মার্শ) কমপক্ষে ৩৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিংয়ের কথা বলছিলাম। তার পর শেষের দিকে স্কোরটা বাড়িয়ে নেব। এখানে আমাদের একটু কাজ করতে হবে। শেষের দিকে আমরা ৫-৬টি উইকেট হারিয়েছি। প্রতিটি রানই গুরুত্বপূর্ণ।’

এদিন অসি ওপেনারের ব্যক্তিগত কিছু রেকর্ডও হয়েছে। ওয়ানডেতে এটি তাঁর ২১তম সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার মাধ্যমে তিনি ছুঁয়েছেন বিরাট কোহলিকে। এই ইনিংসের সৌজন্যে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকার সাত নম্বরে উঠে এসেছেন ওয়ার্নার। এ ছাড়া বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ পাঁচ সেঞ্চুরি করা রিকি পন্টিংয়ের পাশে বসেছেন ওয়ার্নার। ছয়টি সেঞ্চুরি নিয়ে তাঁর সামনে আছেন শচীন টেন্ডুলকার। আর সাতটি সেঞ্চুরি নিয়ে রোহিত শর্মা আছেন সবার শীর্ষে। তবে এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার আরও পাঁচটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। ওয়ার্নার সব ম্যাচ খেলতে পারলে শচীনের রেকর্ড ছোঁয়ার পাশাপাশি তাঁকে ছাড়িয়েও যেতে পারেন।

বিশ্বকাপ খেলতে আসার আগে সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। সেই সিরিজে ভারতের গরমের কারণে ভুগতে হয়েছে ওয়ার্নার-স্মিথদের। ব্যতিক্রম হয়নি অক্টোবরে শুরু হওয়া বিশ্বকাপেও। প্রায় প্রতি ম্যাচেই খেলোয়াড়রা মাংশপেশির চোটে পড়ছেন। রেকর্ডময় জুটি গড়েও কুঁচকির চোটের কারণে ফিল্ডিংয়ের শুরুতেই মাঠ ছাড়েন ওয়ার্নার। অসি এই ওপেনার বলেন, ‘কুঁচকির চোটটা একটু ভুগিয়েছে। তবে এখন ঠিক আছে। দ্রুত রান নেওয়া আমার ডিএনএতেই রয়েছে। আমি এটা সব সময় করেছি।'

অসি দুই ওপেনারে অনেক রেকর্ড এলোমেলো হয়ে গেলেও ওপেনিং পজিশন ছাড়তে হবে মিচেল মার্শকে। কারণ ট্রাভিস হেড ফিট হয়ে গেলেই টপঅর্ডারে ফিরবেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী ম্যাচে ওপেনিং পজিশন ছেড়ে দিয়ে মার্শকে তিনে খেলতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনে ব্যাটিং করা স্টিভ স্মিথ চারে ব্যাটিং করবেন। বাদ পড়ে যাবেন মারনাস ল্যাবুশেনে।

আরসি-০৭