যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ অব্যাহত, বাঙ্কারে লুকালেন ট্রাম্প

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ০২, ২০২০
০২:৩৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ০২, ২০২০
০২:৩৮ পূর্বাহ্ন



যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ অব্যাহত, বাঙ্কারে লুকালেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে ষষ্ঠ দিনের মতো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। সহিংসতার মুখে অন্তত ৪০টি শহরে কারফিউ জারি হলেও তা আমলে নিচ্ছেন না বিক্ষোভকারীরা।

হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ চলাকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছিল সিক্রেট সার্ভিস। হোয়াইট হাউসের একটি গোপন বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া ও লস অ্যাঞ্জেলসে রবিবার রাতে দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও পেপার বুলেট ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের দমনের চেষ্টা করে। বেশ কয়েকটি শহরে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং দোকান লুটের ঘটনা ঘটে।

মিনেসোটা রাজ্যের মিনিয়াপোলিসে জালিয়াতির অভিযোগে ৪৬ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে গলায় হাঁটু দিয়ে চেপে রাখার পর শ্বাসরোধ হয়ে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার মোবাইল ফুটেজ সামনে আসার পরই জড়িত চার পুলিশকে বরখাস্ত করা হলেও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে জরুরি অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা ন্যাশনাল গার্ড রবিবার (৩১ মে)  জানিয়েছে, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিসহ ১৫টি রাজ্যে তাদের পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষোভাকারীরা আবারও হোয়াইট হাউসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখায়, রাস্তায় আগুন জ্বালায় ও নিরাপত্তা কর্মীদের দিকে পাথর ছোড়ে।

এ দিন পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। দাঙ্গা পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে ও ফ্ল্যাশ গ্রেনেড ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যায়। ফিলাডেলফিয়ার স্থানীয় টেলিভিশনে স্টেশনগুলোর সম্প্রচারিত ফুটেজে লোকজনকে পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করতে ও অন্তত একটি দোকান লুট করতে দেখা গেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মোনিকাতেও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

কলোরাডোর রাজধানী ডেনভারে কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেছে। আটলান্টা, বস্টন, মিয়ামি ও ওকলাহোমা সিটিতেও বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে।

এক সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কয়েকশ লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, পরিস্থিতি ক্রমাগত উত্তপ্ত হতে থাকায় ট্রাম্পকে বাঙ্কারে লুকিয়ে রাখেন সিক্রেট সার্ভিসের কর্মকর্তারা। মূলত সন্ত্রাসী হামলাজনিত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য হোয়াইট হাউসে গোপন ওই বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছিল।

শুক্রবার প্রায় ১ ঘণ্টা মাটির তলার বাঙ্কারে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও পুত্র ব্যারন ট্রাম্পকেও বাঙ্কারে রাখা হয়েছিল। হোয়াইট হাউসের সামনে শনি ও রবিবারও বিক্ষোভ হয়েছে। তবে এ দুই দিন ট্রাম্প কী করেছেন তা জানা যায়নি। 

রবিবার (৩১ মে) রাতে হোয়াইট হাউসের সামনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও দেখা গেছে। এদিন হোয়াইট হাউসের কাছেই একাধির উৎস থেকে আগুন চোখে পড়ে। দেখা যায় একটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্টে দেখা গিয়েছে, সাধারণ মানুষ জড়ো হয়ে কোথাও গ্রাফিতি আঁকছেন, কোথাও জ্বলছে আতশবাজি।

বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রবিবার একের পর এক টুইট করেছেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেন, যারা কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু নিয়ে প্রতিবাদ করছেন, তারা নৈরাজ্যবাদী। ট্রাম্পের দাবি বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে গিয়ে দেশের প্রগতিশীল বামপন্থী শক্তিগুলি দেশের মধ্যে নৈরাজ্য চালাচ্ছে।

জেএসএস/এনপি-১১