উপসর্গহীন আক্রান্তরা করোনাভাইরাস ছড়ায় না

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুন ১০, ২০২০
০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১০, ২০২০
০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন



উপসর্গহীন আক্রান্তরা করোনাভাইরাস ছড়ায় না
ডব্লিউএইচও’র নতুন গবেষণা

লক্ষণ বা উপসর্গহীন আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে সাধারণত করোনাভাইরাস ছড়ায় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা এমন দাবি করেছেন। যদিও তার এই ঘোষণা এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বেশ কয়েকটি গবেষণার ফলাফলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ওইসব গবেষণায় বলা হয়েছিল, লক্ষণ উপসর্গহীন আক্রান্তরাই বেশি ঝুঁকির। কারণ তারা নিজের ও অন্যের অজান্তে ভাইরাসটি ছড়াতে পারেন। 

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে যারা কম বয়সী এবং সুস্থাস্থ্যের অধিকারী তারা করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার হলেও তাদের শরীরে দৃশ্যমান কোনো লক্ষণ উপসর্গ প্রকাশ পায় না। অনেকের ক্ষেত্রে খুবই মৃদু উপসর্গ দেখা যায় যা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায়শই  উপেক্ষা করে থাকেন। আবার অনেকে শরীরে ভাইরাস বহন করলেও ভালোমতো সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। 

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে গবেষণায় দেখা যায়, এটি সংস্পর্শের মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। এমনকি ভাইরাসের বাহক বা পোষকের শরীরে যদি কোনো ধরনের উপসর্গ প্রকাশ না-ও পায় তাহলেও তার সংস্পর্শে গেলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর ভিত্তিতেই মূলত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বাধ্যতামূলক মাস্ক পরাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি জারি করা হয়।

কিন্তু এখন এসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা বলছেন, উপসর্গ নেই এমন আক্রান্ত ব্যক্তিও ভাইরাস ছড়াতে পারেন তবে সংক্রমণ বিস্তারের প্রধান পথ এটি নয়। 

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদরদপ্তরে সংস্থাটির ইমার্জিং ডিজিস অ্যান্ড জুয়োনোসিস শাখার প্রধান ড. মারিয়া ভন কারখোভ সোমবার (৮ জুন) এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, আমাদের হাতে থাকা উপাত্ত অনুযায়ী মনে হচ্ছে আক্রান্ত কিন্তু উপসর্গহীন ব্যক্তির কাছ থেকে ভাইরাস ছড়ানোর ঘটনা বিরল। এটি খুবই বিরল।

তিনি বলেন, সরকারগুলোর উচিত উপসর্গ আছে এমন ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইসোলেশন করা এবং তাদের সংস্পর্শে যারা গেছেন তাদের চিহ্নিত করা। 

তবে কিছু গবেষণায় উপসর্গহীন বা প্রকৃতপক্ষে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর কেবল উপসর্গ প্রকাশ পায় এমন রোগীরা বৃদ্ধাশ্রম এবং পরিবারে ভাইরাস ছড়ানোর জন্য দায়ী হতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়টিও স্বীকার করেন ড. মারিয়া। 

প্রকৃত সংক্রমণ শুরুর পর উপসর্গ প্রকাশ পায় তারা ব্যাপকভাবে ভাইরাস ছড়াতে পারে কিনা এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আরো বিস্তারিত তথ্য-উপাত্তের দরকার আছে। আমরা বেশ কয়েকটি দেশের উপাত্ত পেয়েছি যারা কন্ট্যাক্ট ট্র্যাসিংয়ের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। তারা উপসর্গহীন রোগীদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের সংস্পর্শে কারা আসছে তাদেরও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এবং তারা ওইসব উপসর্গহীন রোগীদের কাছ থেকে দ্বিতীয়জন আক্রান্ত হওয়ার নজির পায়নি। এটা ঘটলেও খুবই বিরল ঘটনা। 

তিনি আরো বলেন, আমরা চাই উপসর্গযুক্ত রোগীদের শনাক্তের প্রতি বেশি নজর দেয়া হোক। উপসর্গ আছে এমন আক্রান্তদের যদি আমরা আলাদা করতে পারি এবং তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের কোয়ারেন্টিন করতে পারি তাহলে প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

তবে ড. মারিয়া কেরখোভ বলেন, উপসর্গহীন বা দেরিতে উপসর্গ প্রকাশ পায় এমন দুই গ্রুপই অন্যের মধ্যে ভাইরাস ছড়াতে পারে। এটা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাবে না।  এখানে গুরুত্বপূর্ণ যে পর্যবেক্ষণটি এসেছে সেটি হলো, আমরা কীভাবে ভাইরাস পরীক্ষা করবো এবং এর সংক্রমণ বিস্তার সীমিত করতে পারবো তার একটি দিকনির্দেশনা এখান থেকে পাওয়া যেতে পারে।

জেএসএস/বিএ-১৮