শামীমাকে ব্রিটেনে ফেরাতে চলছে আইনি লড়াই

লন্ডন থেকে সংবাদদাতা


জুন ১৫, ২০২০
০৪:০৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১৫, ২০২০
০৪:০৩ পূর্বাহ্ন



শামীমাকে ব্রিটেনে ফেরাতে চলছে আইনি লড়াই

সিরিয়ায় আই এস এ যোগদানকারী ব্রিটিশ বাংলাদেশী শামীমা বেগমকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে আনতে চলছে আইনি লড়াই। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুন) এ বিষয়ে ব্রিটেনের আদালতে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীতে শামীমার আইনজীবীরা শামীমাকে ফিরিয়ে আনার পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। যদিও তৎকালীন হোম সেক্রেটারি সাজেদ জাভেদ শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল ঘোষণা করেন। বাংলাদেশও শামীমাকে গ্রহণ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নন, তাই বাংলাদেশ তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে রাজি নয়। 

শামীমা বেগমের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার দাওরাই গ্রামে। তবে শামীমার জন্ম ব্রিটেনে। বাংলাদেশে অবস্থানরত শামীমার পিতা তার মেয়েকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে আনতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। 

ইস্ট লন্ডনের ব্যাথনালগ্রীন এলাকার বাসিন্দা কিশোরী শামীমা বেগম ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি লন্ডনের গেটউইক এয়ারপোর্ট দিয়ে ইস্তাম্বুল হয়ে সিরিয়ায় আই এস এ যোগদান করেন। সঙ্গে আরও ছিলেন, খাদিজা সুলতানা (১৬) এবং আমিরা আব্বাসী (১৫)। শামীমা বেগম ইয়াগো রিডজিক নামের এক আইএস জঙ্গীকে বিয়ে করেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে সিরিয়ার ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপনে শামীমার ১ বছরের কন্যা ও তিন মাসের পুত্র সন্তান মৃত্যুবরণ করে। এরপর মানবেতর জীবন থেকে মুক্তির জন্য ব্রিটেনে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন শামীমা বেগম। তার ব্রিটেনে ফিরে আসার বিষয়টি কোর্টে পর্যন্ত গড়ায় ।

শামীমার আইনজীবীরা বলছেন, শামীমার ব্রিটেনে ফিরে আসার অধিকার রয়েছে। কেননা শামীমা জন্মসূত্রে একজন ব্রিটিশ নাগরিক। এছাড়া তিনি যখন জঙ্গী সংগঠন আইএস এ যোগ দেন তখন তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন। 

সরকার পক্ষের কিউ সি জেম্স ফাডিয়ে তার যুক্তি উথ্থাপন করে বলেন, ‘আই এস এ যোগদানকারী কোনো নাগরিক ব্রিটেনে ফিরে আসার অধিকার রাখে না। ইতোমধ্যে তৎকালীন হোম সেক্রেটারি সাজেদ জাভেদ শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল ঘোষণা করেছেন।’ 

শামীমা বেগমের পক্ষের কিউ সি টম হিকম্যান- হোম অফিসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট এবং স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিল কমিশনের বিরুদ্ধে আপিল করেন। কোন কোন কারণে একজন বৃটিশ নাগরিক তার নাগরিকত্ব হারাতে পারেন সে বিষয়গুলি পরিষ্কার করে তুলে ধরেন তিনি। তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘শামীমা বেগমকে দেশবিহীন করা যাবে না, কারণ সে যখন সিরিয়ায় আইএস এ যোগ দিয়েছে। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। এমনকি জিসিএসই পরীক্ষাও দেয়নি। তখন শামীমা বেগম ইস্ট লন্ডনের বেথনাল গ্রীন একাডেমী স্কুলের ছাত্রী ছিলো।’ আদালতে মামলা পরিচালনায় ছিলেন, লর্ড জাস্টিস ফ্লাউক্স, লেডি জাস্টিস কিং এবং লর্ড জাস্টিস। 

এদিকে, শামীমা বেগমকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে আনার আইনি লড়াইয়ের জন্য ৩০ হাজার পাউন্ড সংগ্রহের ক্যাম্পেইন চলছে। ব্রিটিশ বাংলাদেশী একটি গোষ্ঠী মানবাধিকারের নামে শামীমাকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে আনতে তার পক্ষে ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে আইনি লড়াইয়ের জন্য ফান্ডও সংগ্রহ করছে। যারা শামীমার পক্ষে ক্যাম্পেইন করছেন তাদের উদ্দেশ্য এবং চিন্তা চেতনা নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। 

এনপি-০৭